পাতা:বিভূতি রচনাবলী (অষ্টম খণ্ড).djvu/৪০১

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

বিধু মাষ্টার 切A● কুণ্ডু মশায় শিবনেত্র হয়ে শিয়রে উপবিষ্ট ছোকরার দিকে তাকাবার চেষ্টা করলেন। ছেলেটি তখনই নিজে থেকে বললে—উনি আমায় সন্ধ্যেবেলা বলেছিলেন গুছিয়ে রাখতে—ঙর তোর থেকে বের করে রেখেছি । কুণ্ডু মশায় বললেন—এর হাতে দাও। আমি হাতে নিয়ে বললাম—পেয়েছি। এগুলো কি করব বলুন আমায়। আবার তিন চার মিনিট কেটে গেল—রোগী নিরুত্তর। তারপর আমার হাতে দুৰ্ব্বল হাত তুলে দিয়ে বললেন—আপনার কাছে যত্ন করে রেখে দেবেন। ওদের যত্ন আর কোথাও হবে না । ভার নিলেন ? • —নিলাম, ভাববেন না । কুণ্ডু মশায় দীর্ঘ-নিশ্বাস ফেলে বললেন—আর কোন ভাবনা নেই। মরণে ভয় করি নে, বয়েস হয়েছে। এই খাতাগুলো— । শেষের দিকের কথাগুলো যেন কুণ্ডু মশায় আপন মনেই বললেন । o - এই তার শেষ কথা। আমি সারারাত বসে ছিলাম তার শয্যাপার্থে। রাত্রিশেষে কুণ্ডু মশায় মারা গেলেন। শবাসুগমনের সময় আমি সঙ্গে যাওয়া কৰ্ত্তব্য বিবেচনা করলাম । আমারই অনুরোধে তার প্রিয় মজা খালের ধারে তার দাহকাৰ্য্য সমাধা হল। চিতার ওপর আমি আমার নিজের হাতে বন্ত ছোটগোয়ালে লতার ফুল নিকটবৰ্ত্তী ঝোপ থেকে তুলে এনে ছড়িয়ে দিলাম। রায় সাহেবের সঙ্গে দিন চারেক পরে দেখা । আমায় বললেন—আপনি সেদিন শুনলাম খুব করেছেন। লোকটা নিজের দোষেই মারা গুেল। সঞ্চয় অতুল স্ত্রীকে ডেকে বললে—সে টাকা কোথায় গেল ? বাক্সের মধ্যে যে টাকা ছিল ? স্ত্রী দ্বিতীয় পক্ষের বেী, স্বামীকে বেশ ভর করে। সম্প্রতি টাইফয়েড থেকে উঠে অনেক কথাই মনে করে রাখতে পারে না । ভয় পেয়ে বললে—কেন, বাক্সের মধ্যে তোয়ালে-বাধা ছিল—নেই ? —দেখছি নে তো । তুমিও দেখু না খুজে । যা গিয়েছে ড আর পাওয়া যায় না। সে টাকাও পাওয়া গেল না। বাক্সের মধ্যে তো নেইই—কোথাও তু নেই। বিমলা সারা দ্বপুর ধরে শত জায়গার খুঁজেও তার কোন কিনারা করতে পারলে না। সন্ধ্যার সময় মান মুখে এসে স্বামীকে বললে—সে তো পেলাম না ?