পাতা:বিভূতি রচনাবলী (অষ্টম খণ্ড).djvu/৪৪০

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

, ११ বিভূতি-রচনাবলী কোলে নদী পার হতে হবে, রাস্ত নেই, শুধু মাঠের জালের ওপর দিয়ে হাটতে হবে । মস্ত বড় খশান পড়বে নকফুল-রামনগরের। কষাড় বন তিন পোয়া পথ । ফণি বললে-বাবা, রাতিরি কি খাবো ?

  • --চি ড়ে সঙ্গে নিয়ে । তাই ভিজিয়ে বাপ-পোতে খেয়ে নেবো ।

—চল সকাল-সকাল বেরিয়ে যাই । গেল ওরা বেরিয়ে দুপুরের পর ! রামধন পোদ একসময়ে যাত্রার বড় ভক্ত ছিল। একবার তার ছোটবেলায় মতি রায়ের বিখ্যাত যাত্রা-দল এসে তরণীসেন বধ’ পালা গান করে সাহাপুরের বিশ্বাসদের বাড়ী । অমন গান কখনো এদেশে কেউ শোনেনি নাকি । রামধন সেই থেকে যাত্রা গাওনার কত বড় বড় দল সে দেখলে জীবনে । মতি রায়ের দল গেল, তার ছেলে ধর্মদাস রায়ের দল হোল। ধর্মদাস নারদ সেজে কি স্বন্দর অ্যাকূটো করতে, শুনলে চোখে জল আসতে –গান কি একখান ।” 蟾 কতকগুলো গান তার চিরকাল মনে থাকবে । * * সাতরা কোম্পানির দলের পাচুলাল বাগদার কথা সে কখনো ভুলবে ? অমন জুড়ির গান, ‘অজামিলের বৈকুণ্ঠলাভ পালায় মুমুঘু অজামিলের সামনে দাড়িয়ে ‘চেয়ে দেখে ঐ মহাপ্রস্থান গানখানা –সেই দুই হাত ওপরের দিকে তুলে একটা আঙুল দিয়ে বার বার অচেতন অজামিলের দিকে দেখিয়ে দেখিয়ে, বার বার মাথা দুলিয়ে—নাঃ, সে সব জুড়িও আজকাল আর যাত্ৰাদলে নেই, তেমন গানও কেউ আর গায় না। যাদব বাড়ুয্যের দলের রাজার অ্যাকূটে। করতে সেই একটি লোক—ঠিক একেবারে কি রাজামশাই ? আচ্ছা কোথায় ওসব লোক যোগাড় করে যাত্র-দলের লোকেরা ? হাত-পা নেড়ে কি তার কথাবার্তা । ই করে অবাক হয়ে চেয়ে থাকতে রামধন পোদ•••এই রকম না হলি রাজা ? রাজা এরেই বলে। কি তরোয়ালের ঝনঝননি। মাথায় মুকুটের একটা সাদা পালক উচু হয়ে থাকতো,যেন ময়ূরের পেখম! 動 একবার একটা স্বদেশী গান হয়েছিল, ভূষণ দাসের ‘মাতৃপূজা’। রামধন ভাল বুঝতে পারে নি, দেববালকগণ যখন সবাই হাত বাড়িয়ে অস্কররাজের সেনাপতিকে বলতে লাগল—“আমার বাধ, আমায় বাধ’..বৃদ্ধ ব্ৰহ্মাকে যখন অপমান করলে অস্কররাজের কর্মচারীরা—খুব ভালোই লেগেছিলো। মাসরের ভদ্ধর লোকের ঘন ঘন হাততালি দিচ্ছিল—রামধন পোদ তখন চুপ করে বসেছিল, জিনিসটা তার মাথায় ভালো ঢোকে নি যেন। বাইরে এসে সে একজনকে জিগ্যেসূ করেছিল—মুরেন্দর বলচে কাকে ওরা ? —আহা, জানো না । স্বরেন বাড়ুৰ্য্যে। মস্ত স্বদেশী । সাহেব মেরেছিল, ধরে নিয়ে গিয়ে ছিল বরিশালের সভায় । * е —কেন গো-বাৰু?