পাতা:বিভূতি রচনাবলী (অষ্টম খণ্ড).djvu/৪৪৮

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

භූඪෆ বিভূতি-রচনাবলী আবার কিছুকাল দেখলুম না। তাহলে ও বোম্বাই চলে গিয়েচে । হঠাৎ শীতকালের দিকে একদিন দেখি সতীশ ময়লা একখানা ছিট কাপড় পরণে, পাচড়ায় পঙ্গু অবস্থায় থলির মোড়ে সেই চায়ের দোকানের সামনে উবু হয়ে বসে রোদ পোয়াচ্চে। ன . অবস্থায় দেখে বিন্মিত হলুম। পাচড়ার জন্যে ছুটি নিয়ে বোম্বে থেকে চলে এসেচে គt p ও অমায় দেখে যেন থতমত খেয়ে গেল । আমি কোনে কথা বলবার আগেই চায়ের দোকান ও গলির মোড়ের সমিধা থেকে আমার সঙ্গে খানিকটা দূর পর্যন্ত এল । বললে—হাওড়ায় ট্রান্সফার হয়েচি স্তার –ওই গত মাস থেকে । বোম্বাই বড্ড দূরে, মা জতদূর থাকতে...তাই এখানেই—আঞ্জে ষ্ট্য, স্তার। ● তারপর সে বোম্বাইয়ের নানা নিন্দাবাদ আরম্ভ করলে। সে দেশের লোকের সঙ্গে বাঙালীর পোষায় না। জিনিসপত্র আক্রা । থাকার অনুবিধে । বললুম—থাকতে কোথায় ? —আজ্ঞে রেলওয়ে কোয়ার্টারে । o *& এলেমেলো গল্প করতে করতে হঠাৎ কথায় কথায় প্রশ্ন করলুম-সমুদ্র তোমাদের বাসা থেকে কতদূরে ? ও বলে—সমূদ্র ! সে তো অনেক দূর। বোম্বাইয়ের কাছে তো সমুদ্র নেই–ওখান থেকে পনেরো কুড়ি মাইল রাস্তা । মোটর বাস করে যেতে হয়। আমি অবাক হয়ে ওর মুখের দিকে চাইলুম। বলে কি ? বোম্বাই শহর থেকে সমুদ্র কুড়ি মাইল মোটর বাসে যেতে হয় ? ভাবলুম, হতেও পারে—ও কাজে ব্যস্ত থাকতে, কখনো সমুদ্রে যাওয়ার স্থবিধে হয় নি হয় তো। কিন্তু কারো কাছে শোনেও নি কি ? • বগলুম-তুমি কি সমূত্রে যাও নি ? —কেন যাবো না স্তার ? ছুটির দিন হলেই রেলকোম্পানীর মোটর বাসে কতবার সমুদ্রের ধরে বেড়াতে গিয়েচি । দু-ঘণ্টা লাগে শহর থেকে মোটরে । 毫 আমি কোনোদিক থেকেই কোনো হদিস না পেয়ে চুপ করে রইলুম। আমার মনে অনেক রকম সুন্দেহ দেখা দিলে । পাচুড়া অবস্থাতেই দিনকতক দেখলুম ওকে-তারপর পাচড়া সেরে-টেরে গেলে মুস্থ অবস্থাতেও বেলা সাড়ে দশটার পর ফুটপাথে রোদ পেয়াতে দেখলুম কয়েকদিন । একদিন আমায় বললে—স্তার, মার বড় অস্থখ কিনা, তাই আপিসে যাই নে। সেদিন আমাদের ডিপার্টমেন্টের বড় সাহেব মাকে দেখতে এসেছিলেন যে! আমায় বললেন—মুখুয্যে, ভূমি মায়ের অন্বখ না সারা পৰ্যন্ত ছুটি নাও। কোনো ভয় নেই। আমি ছুটি দিচ্ছি। বড় ভুলবাসেন আমাকে ।