পাতা:বিভূতি রচনাবলী (অষ্টম খণ্ড).djvu/৪৬৮

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

৫-ৰ বিভূতি-রচনাবলী এর পরের বছরই কি সেই বছরই নির্মলার বিবাহের সংবাদ পাই। এর ধরে নির্মলার সঙ্গে আমার দেখা হয়েছিল আর একটিবার । আমহাস্ট/ষ্ট্রট বেয়ে আমি হেঁটে যাচ্চি। হঠাৎ একটা মোটর দাড়িয়ে গেল পাশে । নারীকণ্ঠে কে বললে—এই যে, নমস্কার— চেয়ে দেখি নির্মলা । বেশ মোটা হয়েচে । আমার লজ্জা হোল হঠাৎ এভাবে ওর সঙ্গে দেখা হওয়াতে । কারণ আমিও মেদবুদ্ধির পথে কম অগ্রসর হই নি । ওর চেয়ে দুজনের পাল্লাপাল্লিতে বোধহয় আমিই জিতবে। —কোথায় যাচ্চেন ? আম্বন গাড়ীতে—উঠুন— ও একাই ছিল গাড়ীতে । 4. —না, আর গাড়ীতে উঠবে না। ধন্যবাদ । এই তো স্বকিয়া স্ট্রীটে যাবে!— —গাড়ীতে আম্বন না ? নামিয়ে দেবে ওখানে—মুকিয়া স্ত্রীটের কোথায় বলুন। —না না থাক, থ্যাঙ্কস্—ওই তো পাশের গলি, মোড়ের মাথায় । কতটুকু— নমস্কার— 藝 নির্মলা আমার দিকে কেমন যেন একপ্রকার করুণ ও সহানুভূতির দৃষ্টিতে চাইছিল, সেটাই আমার অসহ হোল। আর দাড়াতে পারলুম না । নিজে মোটা হয়েচি বলে লজ্জাও হোল ওর সামনে দাড়াতে । এর পর আর ওর সঙ্গে দেখা হয় নি । 举 華 專 সে আজ বহু বৎসরের কথা। সতেরো-আঠারো বছর আগের কথা । দিন যায় যত, নির্মলার কথাও তত ভুলি। ক্রমে নির্মলার ছবিও অস্পষ্ট হয়ে এসেচে। এমন সময় সেদিন এক ব্যাপার হয়ে গেল। মাসখানেকও হয় নি। আমাদের কলেজে বি-এসসি প্র্যাকটিকাল পরীক্ষা হচ্চে । অন্ত কলেজের কয়েকটি মেয়ে পরীক্ষা দিচ্চে । মেয়েদের পরীক্ষা আমি তত্ত্বাবধান করচি ও পাহারা দিচ্চি সেই রুমে । o একুটি মেয়েকে দেখেই আমার মন ছাত করে উঠলো। আমি অবাক হয়ে ওর মুখের দিকে চেয়ে রইলুম। এর মুখ আমার স্বপরিচিত। মনে হোল অনেকদিন আগে একে চিনতাম। আমিওর মুখের দিকে চেয়ে ভাবচি একে কোথায় দেখে ছিলাম প্রথম যৌবনের কোনোধীনে। • হঠাৎ “আমার চমক ভাঙলো। কি মনে করবে। আমি প্রৌঢ় অধ্যাপক। ওরা অন্ত কলেজের মেয়ে, আমাকে চেনে না, কি ভাবতে পারে। 藝 মেয়েটির ব্যাপার দেখে বুঝলুম সে ফাপরে পডেচে। দুটি প্রশ্ন আছে উদ্ভিদ বিজ্ঞানের। একটি হিস্টোলজির, অপরটি মরফোলজির। মেয়েটি একটি লতার তুংশ সরু করে কেটেচে। কিন্তু কিছুতেই সেটাকে রাঙাতে পারচে না। তিনবার, চারবার ধরে চেষ্টা করলে। ওর হাত কাপচে, চোখে জল টলমল করচে ।