পাতা:বিভূতি রচনাবলী (অষ্টম খণ্ড).djvu/৪৬৯

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

ছায়াছবি 45 আমি দেখলুম মেয়েটি এ কাজ কখনো মন দিয়ে করে নি। সিনেমা দেখে বেডিয়েচে, ক্লালে ফাকি দিয়ে এসে এখন নিজেই ফাকে পড়ে গিয়েচে । কাছে গিয়ে বললুম-কি হচ্চে খুকী ? মেয়েটি কাম্বো কাদে স্বরে বললে—সেকশনটা স্টেইন নিচ্চে না—জড়িয়ে জড়িয়ে थांध्ट्र- * আমি হেসে বললাম—তুমি কোন কলেজের স্টডেণ্ট ? —স্কটিশচার্চ । —সেকশন কাটতে শেখে নি তো ? আত মোটা করে সেকশন কাটে ? তাছাড়া দেখচো না এ লতায় লাল হড়হড়ে আঠা রয়েছে। ওটা অ্যালকোহলে ধুয়ে না নিলে কখনো স্টেন নেয় ? ওটা অ্যালকোহলে ওয়াশ করে নাও। মেয়েটি আমার কথায় অ্যালকোহলে ধুতে গেল। কিন্তু মা লক্ষ্মী দেখলুম সিনেমা দেখেই কাটিয়েচেন । লেখাপড়া কিছুই করেন নি।

  • বললাম—ও কি হচ্চে ? তুমি অ্যালকোহলে ধুতে জানো না ? গ্রেডে তোলো—নইলে সেকশনটা গুটিয়ে যাবে যে 1 আগে কুড়ি, তারপরে পঞ্চাশ, তারপরে সত্তর, তারপরে নব্বই— তারপর অ্যাবসলুট অ্যালকোহলে তোলো—

—কেন, লাইজল দিয়ে ধুয়ে ফেলবে না ? —পাগল, লাইজল দিয়ে এখন ধোবে কেন ? অ্যাবসলিউট অ্যালকোহলে আগে তোলো । ওর হাত কঁপিচে । কখনো একাজ করে নি। গ্রেডে তোলা কাকে বলে তাই ভালো করে শেখেনি হাতে-কলমে করতে, আমার মায়া হোল। বললুম—ছেড়ে দাও খুকী—তুমি মরফোলজির কোশ্চেনটা ট্রাই করো—আমি দেখচি– আমি ল্যাবরেটরীর হেড য়্যাসিস্টান্ট নরেনকে ডাকলুম । নরেন আমারই ছাত্র, গ্র্যাকটিক্যাল কাজে ঘুণ। তাকে বললাম—নরেন, এই সেকশানটা মাউণ্ট করে নিয়ে এসে দ্বাও তো ? 會 নরেন আমার মুখের দিকে চেয়ে দেখে সেকশনটা হাতে নিয়ে চলে গেল। হয়তে ভাবলে প্রৌঢ় অধ্যাপকের এ দুর্বলতা কেন ? স্বন্দরী মেয়ে দেখে তাকে পরীক্ষায় বে-আইনি সাহায্য করচেন । একটু পরে নরেন বেশ চমৎকার ভাবে নিপুণ হস্তে সেকশানটা মাইডের ওপর বসিয়ে কানা বালম দিয়ে বন্ধ কয়ে আমার হাতে এনে দিলে। আমি নিয়ে গিয়ে বললাম—এই নাও খুকী । তার প্রশ্নের উত্তর বে-আইনি ভাবে পেয়ে মেয়েটি কৃতজ্ঞতামূলক হাসলে। অনেকদিন আগে এ হালি কোথায় দেখেছি। এ হাসি আমার কুয়াসাচ্ছন্ন জীবন-দিনের প্রথম অরুণরাগের হাসি। বিশ্বত অরুণরাগের সে শুভ ক্ষণটি আজও কি ভুলেচি ? মৃদ্ধ কৌতুহলের স্বরে প্রশ্ন করলুম-তোমার নাম তো নীলিমা বন্ধ লেখা রয়েচ–তোমাদের