পাতা:বিভূতি রচনাবলী (অষ্টম খণ্ড).djvu/৪৭১

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

--ব্রাহ্মণ । , —বাড়ী কনে ? —এই গ্রামে । —এসো, মোদের নৌকো দেখতি আসবা না ? - ভালুর খুব ইচ্ছা নৌকা দেখিবার, কিন্তু মা যদি বকে! সাহস করিয়া উঠিতে পারিলে মজা হইত বটে, কিন্তু সাহস হয় না। এখন ঘাটে লোকজনের যাতায়াত, ইহাদের মধ্যে কেহ গিয়া মাকে বলিয়া দিতে পারে। এমন সময়ে আসিতে হইবে যখন ঘাটে কেউ থাকে না। ডালু উদাসীন স্বরে বলিল—চল রে সান্ট, বাডী যাই । ভাইয়ের হাত ধরিয়া ডালু বাড়ী চলিয়া গেল । পথের বাদিকে উচু ভাঙামত জায়গা, তাতে বড় বড় আম কঁঠালের গাছ। কোনকালে এখানে ডিঙি-নৌকা আর বড় নৌকার কারখানা ছিল । অজুন মাঝির কারখানা । কত ধরনের ছোট নৌকা, বড় মহাজনী নোঁকু এখানে তৈরি হইত আগে—ণ্ডালু কারখানা দেখে নাই, দেখিয়াছে অজুন মাঝিকে । মাজাভাঙা বঁকাচোরা বুড়ে তেঁতুলতলার ঘাটে বসিয়া তামাক খায় আর মাছ ধরিবার দোয়াড়ি বোনে - কত ধরনের নৌকার গল্প ও নৌকাভ্রমণের গল্প করে অজুর্ন বুডো। ওর মুখে গল্প শুনিয়া পর্যন্ত নৌকার উপর অত্যন্ত মোহ। বড় মহাজনী নৌকা দেখিলে সে যেন কেমন হইয়া যায় ! o সান্ট, বলিল—দাদা, যাবি নে নৌকো দেখতে ? —এখন না, সবাই চলে যাকৃ ঘাট থেকে । —ওরা নৌকোতে উঠতে বললে—উঠলি নে ? —ম বকবে । —আমাকে নিয়ে আসবি তো ? *్క —তুই আর আমি দু-জনেই তো আসবো। সদেবেলা । সান্টর ভাল লাগিল না প্রস্তাবট। সনোবেল এই নদীর ধারে আসা যায় ? চিন্তে বাগদির ভিটের বাকড়া-তেঁতুল গাছটাতে হাড়াকাটার মা থাকে, ছোট ছোট ছেলেকে ষ্ট্রো মারিয়া লইয়া গাছের মগঙালে তোলে। সময়টা বড় খারাপ। সান্ট ভয়ের কথাটা দাদাকে বলিয়াই ফেলিল । ডালু ধমক দিয়া বলিল—তুই বড় বোক ! —কেন দ্বাদ । আর তুমি বুঝি বোকানও ? —তোর মত না । দিনের বাকি সময়টা কোনোরকমে কাটিল। ডালু ভাবে কখল যে সন্ধ্যা হইবে, কখন নৌকা দেখিতে পাওয়া যাইরে, কিন্তু সন্ধ্য আর হয় না, ভালুর মন ছটফট করিতে থাকে। সান্ট, অতশত বোঝে না । ফাদা যেখানে, সেও সেখানে । ভালুছগাছ ছিপ গইয়া সম্ভাব ঘটাখানেক আগে নদীর ধারে গেল। গঙ্গে চলিল লাণ্ট ।