পাতা:বিভূতি রচনাবলী (অষ্টম খণ্ড).djvu/৪৮

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

বিভূতি-রচনাবলী و (يا বিদ্যুৎ-শিখা ওকে এসে স্পর্শ করতেই ওর মনের মধ্যের চিস্তায় এই প্রশ্ন জাগলো—আমি কোথায়...? দেবতাকে দেখা যায় না। তার স্থানে শুধু একটা আলোর মণ্ডলী পরিদৃশ্যমান। পুষ্প বল্লে —দেব, আপনি পৃথিবীর আত্মিক লোকে। আবার ৰিদ্যুতের শিখ । পুষ্পের মনে পুনরায় প্রশ্ন জাগলো—পৃথিবী কি ? পুষ্প বল্লে-পৃথিবী একটা ক্ষুদ্র গ্রহ, স্বর্যের চারিদিকে ঘোরে। পুষ্পের এ কথাগুলো কি ভাবে দেবতা বুঝলেন, পুষ্প জানে না । বোধ হয় এ উত্তরগুলো চিন্তারূপে দেবতার নিজের মনে জাগছিল । পৃথিবীর ভাষায় অনুবাদ করলে দুজনের কথাবার্তা খানিকটা নিম্নোক্তরূপ দাড়ায় । পুনরায় প্রশ্ন হোল— —বিশ্বের কোন অংশে ? পুষ্প বিপদে পড়ে একমনে সেদিনকার সেই দেবতাকে স্মরণ করলে। এ সব প্রশ্নের উত্তর দেওয়া তার সাধ্যের অতীত । আশ্চর্যের উপর আশ্চর্য! সেদিনকার সেই শৈলশিখরারূঢ় দেৰতা তখনই তার সম্মুখে র্তার জ্যোতির্ময় দেহ নিয়ে আবিভূত হোলেন । পুপ প্ৰণাম করে বলে—দেব, আমি সামান্ত৷ মানবী। উনি যে প্রশ্ন করছেন, আমি তার কি উত্তর দেবো ? অামায় বিপদ থেকে উদ্ধার করুন। তারপর সে দ্বিতীয় দেবতাটির পানে কৃতজ্ঞতা ও বিস্ময়পূর্ণ দৃষ্টিতে চেয়ে রইল। তিনি সেদিন ৰলেছিলেন বটে ‘স্মরণ করলেই আমি আসবো’, পুষ্প একথা বিশ্বাস করেনি। সে মহা অপরাধী দেবতার কাছে—ছি ছি, কি অবিশ্বাসী তার আত্মা ! কিন্তু এ চিন্তা চাপা পড়ে গেল আর এক আশ্চর্য ব্যাপারে । দুই দেবতার মধ্যে যেন তীব্র বিদ্যুৎশিখার ক্ষিপ্ৰ আদানপ্রদান চলচে-পৃথিবীর কোনো ঘটনার উপমাম্বারাই তার স্বরূপ বোঝানো যাবে না । দুখানা বড় যুদ্ধজাহাজ যেন পরম্পর পরস্পরের ওপর তীব্র অক্সি-হাইড্রোজেন আলোর সার্চলাইট্র বিক্ষেপ করচে ! দুই বিরাট দেবতার কথাবার্তা চলছিল। পরে এই কথাবার্তা পৃথিবীর ভাষায় অনুবাদ করে পুষ্পের দেবতা-বন্ধু তাকে যা বলেছিলেন, তা এইরূপ— পুষ্পের দেবতাবন্ধু ৰিস্মিত হয়ে জিজ্ঞেস করলেন—আমার অভিনন্দন গ্রহণ করুন। আপনি কে দেব ? আগন্তুক দেবতা বল্লেন—আমি কোথায় আগে বলুন। —পৃথিবীর আত্মিক লোকে । —পৃথিবী কি ? —একটা ক্ষুদ্র গ্রহ, সুর্য নামে একটা নক্ষত্রের চারিধারে ঘোরে । —বিশ্বের কোন অংশে ? –এ প্রশ্নের কি জবাব দেবো? ছায়াপথ দ্বারা সীমাবদ্ধ যে নক্ষত্রজগৎ তারই এক অংশে। আপনি কোন অংশের অধিবাসী ?