পাতা:বিভূতি রচনাবলী (অষ্টম খণ্ড).djvu/৫১

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

দেবযান WoO দেবতা বল্লেন—কি আশ্চর্য । এদের গতি এতটুকু জায়গায় সীমাবদ্ধ ! এর চেয়ে দ্রুত যেতে পারে ন! ? কাটিহার থেকে মুঙ্গেরগামী একখানা ট্রেন এসে পড়লো। দেবতা বিস্ময়ের স্বরে বল্লেন-ও ব্যাপারটা কি ? $ —মানুষে ওই গাড়ীটা তৈরী করেচে। ওকে বলে রেলগাড়ী । খুব জোরে মানুষকে এক জায়গা থেকে আর এক জায়গায় নিয়ে যায়, প্রভু। দেবতা কৌতুকের দৃষ্টিতে চেয়ে বল্লেন- ওই কি দ্রুত যাওয়ার নমুনা ? নমুনা দেখে তো খুব আশী হয় না এদের দ্রুতগামিতার ভবিষ্যৎ ইতিহাস সম্বন্ধে ; ওর নাম কি জোরে যাওয়া ? এক জায়গায় দুটি ছোট ছেলেমেয়ে ভুটাক্ষেত থেকে ভুট্টা চুরি করে খেতে গিয়ে ক্ষেত্রস্বামীর হাতে পড়ে খুব মার খাচ্চে দেখে দেবতা বল্পেন-—আহা, কচি ছেলেমেয়ে দুটিকে অমন করে মারচে কেন ? পরে তিনি ক্ষেত্রস্বামীর মনে সদয় চিন্তা বিক্ষেপ করতে চেষ্টা করলেন । স্থল দেহের স্থল মনে প্রথমেই কোনো কার্যকরী হোল না-কিন্তু অসাধারণ শক্তিশালী দেবতার মনের জোরে তাকে সৎ চিস্তার প্রেরণা স্পর্শ করলে । সে ছেলেমেয়ে দুটিকে ছেড়ে দিয়ে বল্লে--আচ্ছ, যা নিয়েচিস যা, তা এবারকার মত নিয়ে যা—আর কখনো আসিসনে । দেবতা বল্লেন—আহা, এদের তো বড় কষ্ট ! কি অদ্ভুত এই স্থষ্টি ! যত দেখচি ততই এর সৌন্দর্য্যে মুগ্ধ হয়ে যাচ্চি । আমার কি ইচ্ছে হচ্চে জানো—এদের মধ্যে মানুষ হয়ে থাকি । এদের দুঃখ দূর করবার চেষ্টা করি। পুপ বল্লে—দেব, নিকটের এই পাহাড়ের চূড়াটাতে বসে আপনার ভ্রমণের গল্প একটু করবেন দয়া করে ? শুনবার বড় ইচ্ছে হচ্চে । ভাদ্র মাসের গঙ্গ কুলে কুলে ভরা। বিকেল হয়েচে । পশ্চিম দিগন্তে জামালপুরের পাহাড়ের পিছনে রঙীন মেঘস্তুপের আড়ালে স্বৰ্য্য অস্ত যাচ্চে। পাহাড়ের মাথায় ছোট ছোট জঙ্গল । একটা ফাক জায়গায় বন্ত হরীতকী গাছের তলায় ওরা বসলো । নীচে গঙ্গার ধারে একটা পাট-বোঝাই ভড়ের মাঝিমাল্লারা রান্নাবান্নার উদ্যোগ করছিল ৷ যতীন ভাবছিল –এই তো বৃহত্তর জীবন, মৃত্যুর পরে যা সে লাভ করেচে। কোথায় বাংলাদেশের এক ছোট্ট গ্রামে সে ছিল বন্দী, সারা পৃথিবীতে ছড়িয়ে গেল তার জীবন— পৃথিবীর অতীত কত লোকে কত স্তরে এমনি কত নিস্তব্ধ শরং দুপুরে, অপরাহ্লে, কত বসন্তদিনের আসন্ন বেলায়, কত জ্যোৎস্নারাত্রিতে তার ইচ্ছামত অভিযান ভবিষ্যতের ক্ষেত্রে জমা রয়েছে ! এমন সব সুখের দিনে শুধু মনে হয়,সেই হতভাগী— দেবতা তার ভ্রমণের কাহিমী বলতে লাগলেন । সে ভারি চমৎকার কথা । তার সব কথা পুষ্প বা যতীন বুঝতে পারছিল না । তবুও তারা মুগ্ধ হয়ে গেল তার উৎসাহদীপ্ত মুখের ভঙ্গীতে, কথার স্বরে । কত লক্ষ বৎসর পূর্বে তিনি বেরিয়েচেন বিশ্বভ্রমণে । কত গ্রহ, উপগ্রহ, নক্ষত্ৰজগৎ, কত ছায়াপথ, নীহারিকাপুঞ্জ মানসগতিতে ভ্রমণ করেচেন। আলো বা বিদ্যুতের যেখানে পৌছতে লক্ষ লক্ষ বৎসর লাগে—সে 尊 ماسb . ة مةf