পাতা:বিভূতি রচনাবলী (অষ্টম খণ্ড).djvu/৮১

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

দেবযান )اواO অদূরবর্তী চুনী নদীতে এই গরমের দিনে অবগাহন স্নান, হাট থেকে পাকা তরমুজ কিনে আনা •••না, পৃথিবীই ভালো। কোথায় এ সব মুখ ? মাটির পথে চলার ছোটখাটো কত আনন্দ, কত স্থতি...হাসি অশ্র -- পুষ্প হঠাৎ বল্লে—কি ভাবচো যতীন-দা ? ব্রহ্মজ্ঞান পেতে গিয়েছিলে না ? —না পুষ্প, বড় ভাল লাগচে । অনেকদিন পরে এসে – —পৃথিবীর বাতাসে বাসনা কামনা ভাসচে, এজন্য বড় বড় আত্মারা পৃথিবীতে আসতে চান না । ছেলেবেলায় যাত্রা হয়েছিল একটা গান শুনেছিলে নৈহাটিতে ? “এ বাধন বিধির স্বজন, মানব কি তায় খুলুতে পারে'—পৃথিবীতে ফিরে এসে বেশীক্ষণ এই জন্যে থাকতে নেই। ঐ ছোটখাটাে মুখদু:খের সোনার শেকলে বাধা পড়তে সাধ যায়। ‘পঞ্চভূতের ফাদে, ব্রহ্ম পডে কাদে –তুমি তো তুমি! — যা বলেচ পুষ্প, তুমি দেখছি অনেক কিছু জানো— —সত্যি যতীন-দা। আমার কি হয় না ? এখনই হচ্চে। বড় বড় আত্মা পর্যন্ত অনেক সময় পৃথিবীতে কিছুক্ষণের জন্যে ফিরে পুনর্জন্ম গ্রহণের কামনা করেন। নিম্নস্তরের ছৰ্বল আত্মার তো কথাই নেই। খুৎ ধুৎ করে পৃথিবীর কাছাকাছি ঘোরে। নয়তো ফটু করে আবার জন্ম নিয়ে বসে। তাদের ঘন ঘন পৃথিবীতে আসা বারণ ! যতীন হেসে বল্লে—যেমুন আমি— —তুমি কেন, অনেক মহারথীর এই দশা হয়। কিন্তু তাই যদি হবে, তবে মানুষ এগিয়ে চলবে কবে ? ভগবানের তা ইচ্ছে নয়। এগিয়ে চলো, এগিয়ে চলো—এক জায়গায় বাধা পডে থাকলে চলবে না। পথ অফুরন্ত, পথের পাশে ফুলের স্বগন্ধে গাছতলায় ঘুমিয়ে পড়তে ভালো লাগে বটে কিন্তু তা আমাদের গতি আটকে দেবে। আভীঃ, ভয় নেই—এগিয়ে চলো, অভীঃ— * —ও, তুমি এত কথা জানলে কবে পুষ্প ? —করুণাদেবীর সঙ্গে কি এমনি এমনি বেড়াই । তা ছাড়া আমি তোমার কত আগে এখানে এসেচি জানো তো ? দয়া করে ওঁরা আমায় শিখিয়েচেন । ভগবানের মহাশক্তিক্ট এগিয়ে নিয়ে চলেচে সবাইকে— হঠাৎ পুষ্প পুকুরপাডের ওদিকে চেয়ে বল্লে—ঐ স্থাখে। যতীন-দা— যতীন চেয়ে দেখুলে পুকুরপাড়ের আমবাগানের তলা চুপি চুপি চোরের মত একটি লোক এসে দাড়ালো। একটু পরেই ওদের ৰাড়ীর খিড়কিদোর খুলে আশা বের হয়ে এল এবং গাছতলায় লোকটির সঙ্গে যোগ দিলে। যতীন সর্বশরীরে কেমন একটা জালা অনুভব করলে । সংস্কারের প্রভাব, জালা তো দেহের নয়, আসলে মনের । সে আপন মনে বলে উঠলো—যদু মুখুয্যের ছেলে নেত্যনারান— পুষ্প বলে—চেন ওকে ? * --কেন চিনবো না ? শ্বশুরবাড়ীর এ পাড়াতেই ওদের বাড়ী, ও কলকাতায় কি চাকরি