পাতা:বিভূতি রচনাবলী (একাদশ খণ্ড).djvu/১১৪

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

308 বিভূতি-রচনাবলী —মুজরোর চেষ্টা করি। সাজ-পোশাক আছে ? পান্না হেসে বললে—সেজন্তে তোকে ভাবতে হবে না । আমার ট্রাঙ্কের মধ্যে সব গুছিয়ে এনেছি। ওই করেই যখন খেতে হবে। নীলিকে আমি আবার পৌছে দিতে গেলাম। নীলিমা বললে—খুৰ গেঁথেচেন। —মানে ? í... —মানে দেখলেন না ? ও কি বলে সব কথা। ওর মূখে অমন কথা। পায়াকে গেথেচেন ভাল মাছ। আমি ওকে জানি। ভারি সাদা মন । নিজের জিনিসপত্তর পরকে বিলিয়ে দেয় । —তোমাকে কোন কথা বলেচে আমার সম্বন্ধে ? এই কথাটার উত্তর শুনবার জন্যে আমি মরে যাচ্ছিলাম। কিন্তু এ কথার সোজাস্বজি উত্তর নীলিমা আমায় দিলে না। বললে—সে কথা এখন বলকে+না। তবে আপনার ক্ষমতা আছে। অনেকে ওর পিছনে ছিল, গাথতে পারে নি কেউ । আমি তো সব জানি। হরিহরপুরে একবার মুজরো করতে গিয়েছিলাম, সেখানকার জমিদারের ছেলে ওর পেছনে অনেক টাকা খরচ করেছিল। তাকে ও দূর করে দিয়েছিল এক কথায়। তাই তো বলি, আপনার ক্ষমতা আছে । নীলিমার কথা শুনে আমি যে কোন স্বর্গে উঠে গেলাম সে বলা যায় না—ও অবস্থায় যে কখনো না পড়েছে তার কাছে। জীবনের এ সব অতি বড় অনুভূতি, আমি নিজে আস্বাদ করে বুঝেছি। মন এবং মনের বস্তু। টাকা না কড়ি না, বিষয় আশয় না এমন কি ষশমানের আকাঙ্ক্ষা পৰ্য্যস্ত না । ও সব ছেড়েছুড়ে দিয়ে, নিজের সফল প্র্যাকটিস ছেড়ে দিয়ে পান্নাকে নিয়ে অকুলে ভেসেচি। ভেসে আজ বুঝতে পেরেচি, ত্যাগ না করলে বস্তলাভ হয় না। আমার অনুভূতিকে বুঝতে হোলে আমার মত অবস্থায় এসে পড়তে হবে। পান্না আমায় রাত্রে বললে—নীলি পোড়ারমুখী কত কি বলে গেল আমায়। —কি ? 飘 —বললে, এ সব কি আবার ঢং I ও বাবু কি ভোকে চিরকাল এমনি চোখে দেখবে ? তুই নিজের পসার নিজে নষ্ট করতে বসেচিল— —তুমি কি বললে ? —আমি হেসেই খুন। আমাকে অবাক করে দিয়েচে পায়। ওর শ্রেণীর মেয়েরা শুনেচি কেবলই চায়, পুরুষের কাছ থেকে শুধুই আদায় করে নিতে চায়। কিন্তু ও তার অদ্ভূত ব্যতিক্রম। নিজের কৰা কিছুই কি ও ভাবে না। আমার মত একজন বড় ডাক্তারকে গেথে নিয়ে এল, এসে কিছুই দাবি করলে না তার কাছে, বরং তাকে আরও নিজেই উপার্জন করে খাওয়াতে চলেচে। এমন একটি ব্যাপার