পাতা:বিভূতি রচনাবলী (একাদশ খণ্ড).djvu/১১৮

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

இbr বিভূতি-রচনাবলী —মানে আমি একা ছাড়া কারো সঙ্গে শুতে পারি নে কিনা তাই বলছি। —বেশ, সেরেস্তায় শুয়ো । সে ব্যবস্থা হয়ে যাবে। এখন একটা কথা বলি। তুমি তো বেশ বুদ্ধিমান লোক দেখচি। পান্না বলে ওই মেয়েটাকে আজ রাতে এই ধরে পাঠাতে হবে তোমাকে। রাত দু'টোর পর, আসর ভেঙ্গে গেলে। এজন্যে তোমাকে আমি দুটাকা বকশিশ করবো আলাদা। দেবে এনে ? & —আপনি আমায় ভাবনায় ফেলেছেন বাৰু। উনি আমার কথা শুনবেন কেন ? তাছাড়া আমি ওদের দলের রক্সইয়ের বামুন। একথা বলতে গেলে ৰেয়াদবি হবে না ? —তোমার সে দোর তো আগেই খুলে রেখে দিলাম বাপু । আমরা জমিদারি চালাই, আট-ঘাট বেঁধে কাজ করি । বেয়াদবি বলেই যদি মনে করে, চাকরিতে রাখবে না এই তো ? বেশ, কোন ক্ষতি নেই। চাকরি তোমার হবেই কাল এখানে। আরও উপরি দুটো টাকা। তবে পান্নাকে বলবে, ওকেও আমি খুশী করবো। আচ্ছা, ও কত নেবে বলে তোমার মনে হয় ? —আজ্ঞে ওসব খবর আমি কিছু রাখিনে । উনি আমার মনিব, ওসব কথা ওঁর সঙ্গে আমার কি হয় ? নায়েবমশায়ের মুখে একটি ধূৰ্ত্ত লালসার ছাপ উগ্র হয়ে ফুটে উঠলো। চোখ টিপে বললেন—তাতে তোমার ক্ষতিটা কি ? চাকরি হয়েই গেল। কাকে দিয়ে বলাতে হবে বলে না ? নিজে একটু চেষ্টা করে দ্যাখো। যাও, বুঝলে ? না যদি সহজ হয় তবে— এই পর্যন্ত বলে জোয়ারদার মশায় চুপ করলেন। একটা হিংস্র পশু-ভাব সে মুখে। আমার মন বললে এ সাপকে নিয়ে আর বেশি খেলিও না, ছোবল বসাবে । পামাকে সাবধান করে দিলাম সব কথা খুলে বলে। সে হেসে বললে—ও রকম বিপদে অনেক জায়গায় আমাদের পড়তে হয়েচে। তুমি সঙ্গে রয়েচ–ভয় কি ? নীলি দিদিকে বলে দেখচি, ও যায় যাক। যেতে পারে ও, অমন গিয়ে থাকে জানি । নায়েবকে এসে বললাম। তখনও আসর ভাঙ্গে নি । তিনি বসে আছেন ছোট কোণের ঘরটাতে। মুখে সেই অধীর লালসার ছাপ | অশান্ত আগ্রহের স্বরে জিজ্ঞেস করলেন—কি হলো ? এসে ইদিকে। " —সে হোল না। —কি রকম ? —আপনাকে অন্য মেয়েটি যোগাড় করে দিচ্চি। ওর নাম নীলি, ও আসবে এখম। —ওসব হবে না। ওকে আমার দরকার নেই। পান্নাকে চাই। দশ টাকার জায়গায় বিশ টাকা দেবো। বলে দিয়ে এসো। না যদি রাজি হয়, তুমি আমায় সাহায্য কর। বরকন্দাজ দিয়ে ধরে এনে কাছারি-ঘরে পুরে ফেলি ? পারবে ? —আপনাকে একটা কথা বলি। ও বাজে ধরনের মেয়ে নয়। একটা শেষে কেলেঙ্কারি করে বসবেন ? নীলি আস্থক স্বরে, মিটে গেল । ওকে ঘণটাতে যাবেন না।