পাতা:বিভূতি রচনাবলী (একাদশ খণ্ড).djvu/১৩৫

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

ज*ष अज -3.36. —পরের ব্যাপার খুব সংক্ষেপ । সে দেশ বেড়াতে চাইলে, আমিও দেখালাম। পাড়াগায়ের মেয়ে, পরের গলগ্রহ হয়ে পড়েছিল, কখনো কিছু দেখে নি। আমি লা দেখালে ওকে দেখাবে কে ? —আপনাকে বেশ ভালবাসতেন তো ? —খুব । মেকি জিনিস আমাদের চোখে ধরা পড়ে যায়। তার ভালবাসা না পেলে কি আর নেশা জমতো রে ভায়া ? —তারপর দেশ বেড়ালেন ? —ই্য। কালন গিয়েচি, মধুমতী নদীতে নৌকা চড়ে কালীগঞ্জের বাজারে, বারোয়ারির আসরে গিয়েচি–ওদিকে বসিরহাট, টাকী—হাসানাবাদ-জ্যোংস্কারাতে টাকীর বাবুদের বাগানবাড়ীতে দু'জনে বেড়িয়েচি। তার মনে কোন দুঃখু রাখি নি। কলকাতায় নিয়ে যাবো, সব ঠিকঠাক—এমন সময় ভায়া, অঁাসমালির বাজারে গেলাম গান গাইতে । ওকে নিয়ে গেলাম। সেখানে হাটে বড় বান মাছ কিনলাম এক জোড়, রাত্রে সেই মাছ খেয়ে ছজনেরই সকালে ভেদবমি। অনেক কষ্টে আমি বেঁচে উঠলাম, সে দুপুরের পরে মারা গেল। সে কখন গিয়েচে, আমি তা জানি না, আমার তখন জ্ঞান নেই। মানে আমার নিজেরই যাবার কথা তা আমার রোগ-বালাই নিয়ে সে চলে গেল—বডড ভালবাসতো কিনা ? বড় ভাবওয়ালার চোখ দুটো চক্চক্ করে উঠলো। আমি আর কোন কথা বললাম ন। কিছুক্ষণ চুপ করে থাকবার পরে ঝড় বোধ হয় একটু সামলে নিয়ে বললে—পায়াকে দেখে তার কথা মনে পড়লো, অবিকল ওর মত দেখতে—তাই আমি বলি তোমাকে—কিছু মনে কোরো না ভায়া— —এখন কি একাই আছেন ? ক’বছর আগের কথা তিনি মারা গিয়েছেন ? —ন' বছর যাচ্ছে । না, একা নেই। একা থাকতে পারে আমাদের মত লোক ? মিথ্যে সাধুগিরি দেখিয়ে আর কি হবে। আছে একজন, তবে তার মত নয়। দুধের সাধ ঘোলে মেটানে। আর ধরে এখন আমাদের বয়েসও তো হয়েচে ? এই বয়েসে আর কি আশা করতে পারি ? বেলা প্রায় দশটা। আমি ঝড় মল্লিকের কাছ থেকে বিদায় নিয়ে বাসায় এসে দেখি পান্না কুটনো ফুটচে, সেখানে ছ'টি মেয়ে বসে আছে ওরই বয়সী। আমায় দেখে মেয়ে ছুটি উঠে চলে গেল। পান্ন বললে—বোটমের মেয়ে ওরা, এখানেই বাড়ী। আমি কীৰ্ত্তন গাই কিনা জিজ্ঞেস করছিল। —কেন, খেমটা ছেড়ে ঢপের জল বাধবে নাকি ? –তা নয়, মেয়ে ছটোর ইচ্ছে নাচ গান শেখে। তা আমি বলে দিইটি, গেরন্ত বাড়ীর মেয়েদের এখানে যাতায়াত না করাই ভালো । আমরা উত্তর দিয়েটি বলে কি সবাই বাবে? —খুব ভালো করেচ। আচ্ছ, তোমার মনে হয় তুমি উচ্ছন্ন গিয়েট ?