পাতা:বিভূতি রচনাবলী (একাদশ খণ্ড).djvu/১৫৬

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

$ées বিভূতি-রচনাবলী —ও যা হয় করুন, চুলি-খরচ বলে লিখুন না 7 ঢোল শহরং তো করতেই হবে—দাজ না হয় কাল । —আর, এবেলার এই এক টাকা ? —কোন এক টাকা ? —এই ষে সাধু নিয়ে গেল ? go —ও ! ওটা আমার নামে খরচ লিখুন। ব্যাটা আচ্ছা ধাপ্পাবাজি ক'রে টাকাটা নিয়ে গেল! ' —ওইজন্যেই আংটি খুলতে বলেছিল বাপু, এইবার বোঝা যাচ্ছে। সেই তো । কারণ, সোনা তো আংটিতে রয়েচে, আবার চাদি কি হবে যদি বলি ? আঙটি তো আর আঙুল থেকে টেনে খুলে নিয়ে সর্টকান দেওয়া যায় না! ডাকাত একেবারে । এদের কথা সব মিথ্যে ! কথাগুলো গদাধর যেরূপ জোর দিয়া বলিলেন, তাহাতে মনে হইল, তিনি তাহার বোকামির জন্ত নিজে যেমন লজ্জিত হইয়াছেন, সাধু সম্বন্ধে ভড় মহাশয়ের নিকট হইতেও কটুক্তি শুনিতে পাইলে যেন কিছুটা আশ্বস্ত হন। ভড় মহাশয় কিন্তু দেবদ্বিজে অসাধারণ ভক্তিমান বৃদ্ধ ব্যক্তি। মনিবের মন যোগাইবার জন্যও তিনি সাধুর প্রতি অবিশ্বাসস্থচক কোন কথা বলিতে রাজী নন। স্বতরাং তিনি চুপ করিয়াই রছিলেন। সন্ধ্যার কিছু পরে গদাধর বাড়ী ফিরিলেন। স্ত্রী অমঙ্গমোহিনী রান্নাঘরে ছিল, স্বামীর সাড়া পাইয়া বাহিরে আসিয়া বলিল—আজ সকাল-সকাল যে ? কি ভাগ্যি ! • —কাজ মিটে গেল তাই এলাম! একটু চা খাওয়াবে ? —ভাতটা চড়েছে—নামিয়ে ক’রে দিচ্ছি। --ভূমি রাধচো নাকি ? —ষ্ট্য । আজ তো পিলিমার সন্দের পর থেকেই ভীষণ জর এসেচে। তিনি উঠতেই পারেন না, তা রাধবেন কি ? --তাইভে ৷ কাল একবার ডাক্তার ডাকি—প্রায়ই তো ওঁর জর হোতে লাগলো--- —উনি ডাক্তারি-ওখুধ তো খাবেন না—ডাক্তার ডাকিয়ে কি করবে ? —তুমিই বা ক'দিন এরকম রাধবে ? —তা ব'লে কি হবে ? যে ক'দিন পারি। বাড়ীর লোক কি না খেয়ে থাকবে ? গদাধর আর কোনো কথা না বলিয়া নিজের ঘরে গিয়া বসিলেন--কিছুক্ষণ পরে চাকর তামাক সাজিয়া দিয়া গেল। এই চাকরটির ইতিহাস বেশ নতুন ধরণের। ইহার নাম— গৈবি । বাড়ী—নেপাল। গদাধরের বাবার আমলে একদিন সে এ-গ্রামে আলিয়া ইহাদের আশ্রয় প্রার্থনা করে । লে অভ্যাজ সতেরো-আঠারো বছর আগেকার কথা। সেই হইতেই গৈবি এখানে থাকে এবং কথাবার্তায় সে পুরা বাঙালী। তাহাকে বর্তমানে নেপালী বলিয়া চিনিবার কোন উপায় নাই ।