পাতা:বিভূতি রচনাবলী (একাদশ খণ্ড).djvu/১৫৮

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

39br विङ्कडि-बध्नांदणौ —এ শখ কেন ? —এ-শখ কেন, যদি মেয়েমাস্থ্য হতে, তবে বুঝতে । —যখন তা হই নি তখন আপসেসি ক’রে লাভ নেই। এখন চা-টা খাবে ; জুড়িয়ে যে জল হয়ে গেল ! বলিয়া গদাধর চায়ের পেয়াল মুখ হইতে নামাইয়া রাখিলেন। স্বামীর কথায় চা-টুকু শেষ করিয়া অনঙ্গ ঘরের বাইরে যাইবার উপক্ৰম করিতেই গদাধর বলিলেন—একটু দাড়াও না ছাই । অনঙ্গ হাসিয়া বলিল— বসলে চলে ? রান্না-বান্না সবই বাকী। —তা হোক, বোসে একটু। অনঙ্গ স্বামীর সংস্পর্শ হইতে বেশ-কিছু দূরে বসিয়া বলিল—এই বসলাম । অর্থাৎ সে এখন শুচি-বস্ত্র পরিয়া রান্না করিতেছে—নাস্তিক গদাধরের আড়ত-বেড়ানো কাপড় পরনে, সে এখন স্বামীর সঙ্গে ছোয়া-চুয়ি করিতে রাজি নয়। গদাধর মুচকি হাসিয়া বলিলেন–ছু য়ে দিই? —তাহ’লে থাকলে হাড়ি উকুনে চড়ানো—সে হাড়ি আর নামবে না । —ভালোই তো । কারো খাওয়া হলে না । --কারো খাওয়ার জন্যে আমার দায় পড়েচে ভাববার। ছেলেমেয়েরা কষ্ট পাবে না খেয়ে সেটাই ভাবনার কথা । —ও, বেশ । আমার কাছে পষ্ট কথা—পষ্ট কথার কষ্ট নেই। —সে তো বটেই। অনঙ্গ হাসিতে লাগিল । তাহার বয়স এই সাতাশ- আটাশ–প্রথম যৌবনের রূপ-লাবণ্য কলে ঝরিয়া গেলেও অনঙ্গ এখনও রূপসী । এখনও তাহার দিকে চাহিয়া দেখিতে ইচ্ছা করে। রং ষে খুব ফর্শ তা নয়, উজ্জল খাম বললেই ভালো হয়, কিন্তু অনঙ্গর মুখের গড়নের মধ্যে এমন একটা আলগা চটক আছে, চোখ এমন টানা-টানা, ভুরি দুটি এমন সরু ও কালো, ঠোঁট এমন পাতলা, বাহু ছটির গড়ন এমন নিটোল, মাথার চুলের রাশ এমন ঘন ও ঠাসবুর্নানো, হাসি এমন মিষ্ট যে, মনে হয়, সাঞ্জিয়া-গুজিয়া মুখে স্নো-পাউডার মাখিয়া বেড়াইলে এখনও অনঙ্গ অনেকের মুণ্ড ঘুরাইয়া দিতে পারে! নারীর আদিম শক্তি ইহার মধ্যে যেন এখনও নির্বাপিত আগ্নেয়-গিরির গর্ভে স্বপ্ত-অগ্নির মতই বিরাজমান । গদাধর বলিলেন—সাধু আজ আমার হাত দেখে কি বলেচে জানো ? —কি গা ? —আমার নাকি শীগগির খুব খারাপ সময় হবে। অনঙ্গ শিহরিয়া উঠিয়া বলিল - ওমা, সে কি গো !