পাতা:বিভূতি রচনাবলী (একাদশ খণ্ড).djvu/১৮২

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

Noè বিভূতি-রচনাবলী গদাধরের আড়তের কাজও এখন ভালো চলে নাই । ভড়মহাশয় পুরানো লোক,—তিনি একদিন বলিলেন—এখানে কাজ দাড়াবে ভালো বাৰু। ভড়মহাশয়কে গদাধর বিশ্বাস করিতেন খুব বেশি, তার কথার উপর নির্ভর করিতেন অনেকখানি। উৎফুল্প হইয়া বলিলেন—দাড়াবে ব’লে আপনার মনে হয় ভড়মশায় ? —আমার কথাটা ধরেই রাখুন বাৰু—চুল পাকিয়ে ফেললাম এই কাজ করে। মুখপাতেই জিনিস বোঝা যায়, মুখপাত দেখা দিয়েচে ভালো । —আপনি বললে অনেকটা ভরসা পাই । —আমি আপনাকে বাজে-কথা বলবো না বাৰু । কলিকাতায় আসিয়া অনঙ্গ খুব আনন্দে দিনকতক কালীঘাট ইত্যাদি দেখিয়া কাটাইল— দক্ষিণেশ্বরে দু'দিন মন্দির দর্শন ও গঙ্গাস্নান করিল-দূর সম্পর্কের কে এক পিসতুতো ভাই ছিল এখানে, তাহার বাসা খুঁজিয়া বাহির করিয়া, তাহার স্ত্রীর সঙ্গে কি-একটা পাতাইয়া আসিল--"বৌবাজারের দোকান হইতে আসবাবপত্র আনাইয়া মনের মত করিয়া ঘর সাজাইল। ছেলে দুটিকে কাছের এক স্কুলে ভত্তি করিয়া দেওয়া হইল ; বাড়ীতে পড়ানোর জন্য মাস্টার রাখা—এক কথায় ভালো করিয়াই এখানে সংসার পাতিয়া বসা হুইল । একদিন নিৰ্ম্মল আসিয়া আড়তে দেখা করিল । প্রায় মাসখানেক দেখাই হয় নাই তার সঙ্গে । গদাধর খুশী হইয়া বলিলেন—অারে এসো, নিৰ্ম্মল! দেশ থেকে এলে এখন ? খবর ভালো ? —হঁ্যা । তোমার সঙ্গে দেখা হয় নি অনেকদিন, তাই এলাম একবার। —খুব ভলো করেচে। যাও, বাড়ীতে যাও—তোমার বৌ-ঠাকরুণ আছেন, গিয়ে ততক্ষণ চ-টা খাওগে, আমি আসচি । নিৰ্ম্মল নীচু-গলায় বলিল—কিন্তু তোমার কাছে এসেছিলাম আর-এক কাজে। আমার কিছু টাকার বড়ো প্রয়োজন, ভাই । 歌 —কেন, হঠাৎ টাকার কি প্রয়োজন হলো ? —বাকি খাজনার দায়ে পৈতৃক জমি বিক্রি হতে বসেচে—দেখাবে। এখন সব তোমায় । —কত টাকা ? —শ’তিনেক । —কবে চাই ? —অীজই দাও । তোমাকে হাগুনোট দেবো তার বদলে । —কিছুই দিতে হবে না তোমায়। যখন স্থবিধে হবে, দিয়ে দিও। নিৰ্ম্মল যথেষ্ট কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করিল। করিবারই কথা । সে-দিনটা গদাধরের বাড়ীতে থাকিয়া আহারাদি করিয়া সন্ধ্যাবেল বলিল—চলে গঙ্গাই, তোমাকে ৰায়োস্কোপ