পাতা:বিভূতি রচনাবলী (একাদশ খণ্ড).djvu/২১০

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

>あ● বিভূতি-রচনাবলী ভাবিলেন—টীকা সার্থক হয় এই ব্যবসায়। খরচ করেও স্বথ, লাভ ৰদি পাই তাতেও স্বর্থ ! যে বয়সের যা—আমার বয়েস তো চল্পে যায় নি এ-সবের ! অল্প একটু বিশ্রাম করিয়া রেখা বলিল—কথাকলি দেখবেন ? সেবার এম্পায়ারে এসেছিলেন সত্যভামা দেী—মাদ্রাজী মেয়ে, আমন কথাকলি আর কখনো--"কি পোজ একএকখান ! আমরা স্টুডিও স্বদ্ধ, নাচিয়ের দল এম্পায়ারে দেখতে গিয়েছিলুম কোম্পানির খরচে । দেখবেন ? e —তুমি একবার দেখেই অমনি শিখে নিলে ? —কেন নেবো না —আমরা আর্টিস্ট, লোক ! _ —আচ্ছা, থাকৃ এখন কথাকলি । স্বযমা দেবী কই ? তাকে ডেকে ফর্মটা সই ক’রে নেওয়া দরকার । ডাক দিতে সুষমা আসিল । দেখিতে ভালো নয়, দোহারা চেহারা—গলার স্বর বেশ মিষ্ট। বেশি কথা বলে না, তবে সে আসিয়া সমস্ত জিনিসটা একটা তামাশার ভাবে গ্রহণ করিল। অঘোরবাবু বলিলেন–টাকাটা লিখুন আগে—চল্লিশ টাকা । স্বষম কোনো কথা না বলিয়া নাম সই করিয়া চেক্ লইয়া চলিয়া যাইতে উদ্যত হইলে অঘোরবাবু বলিলেন—উহু, গান গাইতে হবে একটা— সুষম হাসিয়া বলিল—সে কি ? এখন কখনো গান হতে পারে ? —ক্যাপিটালিস্ট বলচেন,- ওঁর কথা রাখতে হবে । গান করুন একটা । গদাধর মোলায়েম ভাবে বলিলেন - না, না, থাকৃ। উনি নামকরা গায়িকা—সবাই জানে। ওঁকে আর গান গাইতে হবে না। ও নিয়ম সকলের জন্তে নয়। রেখা কাছেই ছিল, সে ঘাড় বাকাইয়া বলিল—নিয়মটা তবে কি আমার মত বাজে লোকদের জন্যে তৈরী ? এ তে রীতিমত অপমানের কথা । না, এ কখনো ইহীদের কি করিয়া চালাইতে হয়, অঘোরবাবু জানেন । তিনি রেখার কাছে ঘেষিয়া দাড়াইয় তাহার মুখের কাছে হাত ঘুরাইয়া বলিলেন–রেখা বি—মানে দেবী, চটে কেন ? গান আমরা সৰ্ব্বদা গ্রামোফোনে শুনচি, রেডিওতে শুনচি। কলকতায় তো গান শোনবার অভাব নেই—কিন্তু নাচ আমরা সর্বদা দেখি নে—তোমার মত আর্টিস্টের নাচ দেখার একটা লেভিও তো আছে—বুঝলে না ? গদাধরের বেশ লাগিতেছিল। বাড়িতে থাকিলে এতক্ষণ তিনি ঘুমাইয়া পড়িয়াছেন— নয়তে বসিয়া গরি হিসাবপত্র দেখিতেছেন। এ তবু পাঁচজনের মুখ দেখিয়া আনন্দে আছেন—বিশেষ করিয়া এমন সঙ্গ, এমন একটা রাত ! একবার তাহার মনে হইল, অনঙ্গ আজ একটু সকাল-সকাল ফিরিতে বলিয়াছিল, বাড়ীতে যেন কি পূজা হইবে। তা তিনি গিয়া কি করিবেন ? ভড়মশায় আছে, নিতাই আছে—দু’জন চাকর অাছে—তাহারাই সব দেখাশুনা করিতে পারিবে এখন। তাহার অত গরজ নাই ।