পাতা:বিভূতি রচনাবলী (একাদশ খণ্ড).djvu/২১৮

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

বিভূতি-রচনাবলী ماخذ জামার। আমার কাছে এসেছেন টাকা ধার নিতে, বেশ মজার লোক তে আপনি । আপনার কলকাতায় বাড়ী আছে, মটগেজ রাখলে যে-কোম জায়গা থেকে ধার পাবেন। ব্যাঙ্ক থেকেই তো ওভারড্রাফট, নিতে পারেন! গদাধর দুঃখিতভাবে বলিলেন—সে-সব করা তো চলে, কিন্তু তাতে বাজারে ক্রেডিট থাকে না ব্যৰসাদারের। ব্যাঙ্কে ওভারড্রাফট নেওয়া চলবে না-বাড়ী বন্ধক দেওয়াও নম্ন ৷ আছে অনঙ্গর গহনা, তা কি এখন বিক্রি করতে যাবো ? শোভা নিস্পৃহ ভাবে বলিল—কিন্তু আমি সেজন্যে দায়ী নই। আমার কাছে কেন এসেচেন ? আপনার বোঝা উচিত ছিল আমার কাছে আসবার আগে, যে, আমি পোদ্ধার নই, টাকা ধারের ব্যবসাও করি নে। —ত হোক, তুমি দাও, ও টাকাটা তোমার আছে খুবই। আমার বড় উপকার করা হবে । প্রায় ঘণ্টাখানেক ধরিয়া উভয়ের কথাবাৰ্ত্ত চলিল। শোভা কিছুতেই টাকা দিবে না, গঙ্গাধরও নাছোড়বান্দা। অবশেষে বহু অস্থময়-বিনয়ের পরে শোভা চার হাজার টাকা দিতে মিমরাজিগোছের হইল—বাকি টাকা দিতে সে পারিবে না, স্পষ্ট বলিল—গদাধর অন্য যেখান হইতে পারেন, সে টাকা যোগাড় করুন— م গদাধর বলিলেন—তবে চেক্‌খালা লিখে ফেল—আমি হ্যাগুনোট, লিখি—স্বদ কত লিখবো ? —সাড়ে বারো পার্সেণ্ট । —ওটা সাড়ে-নয় ক’রে নাও। তুমি তো আর স্বদখোর মহাজন নও ? উপকার করবার জন্যে তো দিচ্চো—স্বদের লোভে দিচ্চো না তো ! —টাকা ধার দিচ্চি যখন, তখন ন্যায্য স্বদ নেবে। না তো কি ! উপকার করচি, কে আপনাকে বলেচে ? কারো উপকার করার গরজ নেই আমার ; সাড়ে-বারো পার্সেন্টের কমে পারবো না । ওর চেয়েও বেশি স্বদ অপরে নেয়। গঙ্গাধর অগত্যা সেই হিসাবেই হ্যাগুনোট, লিখিয়া, চেক লইয়া গেলেন। সেদিন রাত্রে অনঙ্গ স্বামীকে বলিল,—হঁ্যাগ, একটা কথা বলবো, শুনবে ? —কি ? —তোমার টাকার দরকার হয়েচে বলচেন ভড়মশায়, কত টাকার দরকার ? —কেন ? —বলো না, কত টাকার ? —দু'হাজার টাকার—দেবে ? —আমার গহনা বাধা দাও—নয় তো বিক্রি করো। নয় তো আর টাকা কোথা থেকে পাৰে । কিন্তু এত টাকা তোমার দরকার হলো কিসের ?