পাতা:বিভূতি রচনাবলী (একাদশ খণ্ড).djvu/২২০

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

বিভূতি-রচনাৰঙ্গী هْ ة ډ ভাহা হইতে জানা গেল, জয়ন্তী-পাহাড়ে ভোটান ঘাট নামক স্থানে তিনি আছেন। অনঙ্গ চিঠি দিল খুব শীঘ্ৰ ফিরিবার জন্য অনুরোধ করিয়া । গদাধর লিখিলেন, এখন তিনি কাজে ব্যস্ত, শেষ না করিয়া মাইতে পারিবেন না। অনঙ্গ কাদিয়া-কাটিয়া আকুল হইল। একদিম পথে হঠাৎ শচীনের সঙ্গে ভড়মশায়ের দেখা। ভড়মশায় শচীনকে গদাধরের ব্যাপার সব বলিলেন । இ. শচীন বলিল—ত আপনারা এত ভাবচেন কেন ? সে কোথায় গিয়েচে আমি জানি। —কোথায় বলুন—বলতেই হবে। আপনার বৌদিদি ভেবে আকুল হয়েচেন—জানেন তো বলুম। —আমার কাছে শুনেচেন, তা বলবেন না । সে তার কোম্পানির সঙ্গে শুটিংএ গিয়েচে জয়ন্তী-পাহাড়ে। পাহাড় ও বনের দৃপ্ত তুলতে হবে—ভোটান ঘাটে শুটিং হচ্চে । —সে কি, বুঝলাম না তো ! শুটিং কি ব্যাপার ? —আরে, ফিল্ম তৈরী হচ্চে মশাই—ফিল্ম, তৈরী হচে । গদাধর ফিল্ম কোম্পানি খুলেচে —অনেক টাকা ঢেলেচে-নিজের আছে, আর একজন অংশীদার আছে। তাই ওরা গিয়েচে ওখানে—কিছু ভাববেন না। আমার কাছে শুনেচেন বলবেন না কিন্তু । ভড়মশায় শুনিয়া মাথায় হাত দিয়া পড়িলেন। মনিব পাটের গদির ক্যাশ ভাঙিয়া ছবি তৈরির ব্যবসায় লাগিয়াছেন, এ ভালো লক্ষণ নয়। সে নাকি যত নটী লইয়া কারবার, তাহাতে মামুষের চরিত্র ভালো থাকে না, থাকিতে পারে না কখনও ! বৌ-ঠাকরুণ সতীলক্ষ্মী, এখন দেখা যাইতেছে, তাহার আশঙ্কা তবে নিতান্ত অমূলক নয়! অনঙ্গকে তিনি এ-কথা কিছু জানাইলেন না। আরও দুই মাস আড়াই মাস কাটিয়া গেল, গদাধর ফিরিলেন না, এদিকে একদিন গদির ঠিকানায় গদাধরের নামে এক পত্র আসিল । মনিবের নামের পত্র ভড়মশায় খুলিতেন— খুলিয়া দেখিলেন, শোভারাণী মিত্র বলিয়া কে একটি মেয়ে তাহার পাওনা চার হাজার টাকার জন্ত কড়া তাগাদ দিয়াছে ! ভড়মশায় বড়ই বিপদে পড়িলেন—কে এ মেয়েটি—মনিব তাহার নিকট এত টাকা ধার করিতেই-বা গেলেন কেন-এ-সব কথার কোনো মীমাংসাই ভড়মশfয় করিতে পারিলেন না। সাত-পাচ ভাবিয়া ঠিক করিলেন, মেয়েটির সঙ্গে নিজেই একবার দেখা করিবেন। চিঠিতে ঠিকানা লেখা ছিল, ভড়মশায় একদিন ভয়ে-ভয়ে গিয়া দরজায় কড়া নাড়িলেন। চাকর আসিয়া দরজা খুলিয়াই বলিল--ও, তুমি আড়তের লোক ? ভড়মশায় বলিলেন—হঁ্যা । —মাইজি ওপরে আছেন, এসে । _ ভড়মশায় কিছু বুঝিতে পারিলেন না—এ চাকরটি কি করিয়া জানিল, তিনি আড়তের লোক ? উপরে যে-ঘরে চাকয়টি তাহাকে লইয়া গেল, সে ঘরে একটি স্বন্দরী মেয়ে চেয়ারে হেলান