পাতা:বিভূতি রচনাবলী (একাদশ খণ্ড).djvu/২২২

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

২০২ বিভূতি-রচনাৰলী —আমার চিঠি পেয়েছিলেন ? —ধ্য, নিশ্চয়ই। উত্তর দিতুম, কিন্তু চলে আসবে কলকাতার, ভাবলুম আর চিঠি দিয়ে কি হবে, দেখাই তো করবো । —আমার টাকার কি ব্যবস্থা করলেন। –টাকার ব্যবস্থা হয়েই রয়েচে । ছবি তোলা হয়ে গেল—এখন চালু হলেই টাকা হাতে আসবে। —তার আগে নয় ? —তার আগে কোথা থেকে হবে বলো ? সবই তো বোঝে। কলকাতার বাড়ীও মর্টগেজ দিতে হয়েছে বাকী বারো হাজার টাকা তুলতে। এখন সব সার্থক হয়, যদি ছবি ভালো বিক্রি হয় ! —ওসব আমি কি জানি ? বেশ লোক দেখছি আপনি । কবে আমার টাকা দেবেল, ঠিক বলে যান। —আর দুটো মাস অপেক্ষা করে । তোমার এখন তাড়াতাড়ি টাকার দরকার কি ? স্বদ আসচে আস্থক না । এও তো ব্যবসা । শোভা ভ্ৰ কুঞ্চিত করিয়া বলিল—বেশ মজার কথা বললেন যে ! আমার স্বদের ব্যবসাতে দরকার নেই। টাকা কবে দেবেন, বলুন ? তখন তো বলেন নি এত কথা-টাকা নেবার সময় বলেছিলেন, এক মাসের জন্তে ! , গদাধর মিনতির মুরে বলিলেন–কিছু মনে কোরো না শোভা । এসময় ষে কি সময় আমার, বুঝে দ্যাথো। ক্যাশে টাকা নেই গদিতে। মিলের নতুন অর্ডার আর নিই নি— এখন পুজি যা-কিছু সব এতে ফেলেচি। —কত দিনের মধ্যে দেবেন? ছ'মাস দেরি করতে পারবো না । —আচ্ছা, একটা মাস ! এই কথা রইলো। এখন তবে আসি। এই কথাটা বলতেই আসা —বেশ, আমুন। দুই মাস ছাড়িয়া তিন মাস হুইয়া গেল। গদাধর বড় বিপদে পড়িয়া গেলেন। ডিস্ট্রিবিউটার ছবি তৈরী করিতে অগ্রিম অনেকগুলি টাকা দিয়াছে, ছবি বিক্রির প্রথম দিকের টাকাটা তাহারাই লইতে লাগিল। ছবি ভাড়া দেওয়া বা বিক্রয় করার ভার তাদের হাতে, টাকা আসিলে আগে তাহারা নিজেদের প্রাপ্য কাটিয়া লয়—গদাধরের হাতে এক পয়সাও আসিল না এই তিন মাসের মধ্যে। অথচ পাওনাদাররা ছবেলা তাগাদ শুরু করিল। যে-পরিমাণে তাহাদের উৎসাহ ও অধ্যবসায় তাহারা প্রদর্শন করিতে লাগিল টাকার তাগিদ দিতে তাহার অৰ্দ্ধেক পরিমাণ উৎসাহ ও অধ্যবসায় দেখাইয়া মারকোনি বেতার-বার্তা পাঠাইবার কৌশল আবিষ্কার