পাতা:বিভূতি রচনাবলী (একাদশ খণ্ড).djvu/২৩৫

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

দম্পতি २$4 গৃহস্থের বাড়ী চলিয়া গিয়াছে—তাহার পরিবর্তে বাড়ীর কানাচে রাত্রিবেলা পেঁচার কর্কশ স্বর শোনা যায় রাত দুপুরে, আমড়া গাছের মাথায় চাদ ওঠে, এক-এক ছেলে দুটি লইয়া এই শতস্থতিভরা বাড়ীতে থাকিতে তাহার বুকভাঙা দীর্ঘনিশ্বাস পড়ে, প্রতিদিন কলকাতা হইতে জানা সেই পালঙ্কে শুইবার সময়। রাত্রি নির্জন—বাড়ীটা ফাকা—কেহ কোথাও নাই আজ। দিনের বেলায় তৰু কাজ লইয়া ভুলিয়া থাকা যায়, রাতের নির্জনতা যখন বুকে চাপিয়া বলে—তাহার বুক হু হু করে, শক্ৰ হাসাইবার ভয়ে যে কান্নার বেগ দিনমানে চাপিয়া রাখিতে হয়—রাতে তাহা আর বাধা মানে না | হাতে বিশেষ পয়সা আর নাই—ভড়মশায়ের সাহায্যে সে ছোট-খাটো খুচরা ব্যবসা চালাইতে লাগিল । মূলধন নাই, হাটবারে রাস্তার ধারে পাটের ফোঁট কিনিয়া কোনদিন একমণ, কোনদিন-বা কিছু বেশী মাল কৃষ্ণ দায়ের আড়তে বিক্রি করিয়া নগদ আট আনা কি বারো আনা লাভ হয়, হাত-খরচটা একরূপে চলিয়া যায় তাহা হইতে । মূলধনের অভাবে বেশি পরিমাণে খরিদ-বিক্রি করা চলিল না, দুদিনের বন্ধু ভড়মশায়. অনেক চেষ্টা করিয়াও কোথাও বেশী পুজি জটাইতে পারিলেন না। একদিন নিৰ্ম্মল দেখা করিতে আসিল । অনঙ্গ সন্তুষ্ট ছিল না নিৰ্ম্মলের উপর—তবুও জিজ্ঞাসা করিল-ওঁর খবর জানো ঠাকুরপো ? —কলকাতাতেই আছে, শচীনের কাছে শুনেচি । —তুমি জানো ঠিকানা ঠাকুরপো ? বাড়ীতে একবার আসতে বলে না ওঁকে ৰ৷ হৰরি হয়েচে, তা ভেবে আর কি হবে। বাড়ীতে এসে বন্ধন, আমি চালাবো, ওঁকে কিছু করতে হবে না । 穆 —পাগল হয়েচে বৌদি ? গদাধরদাকে চেনে না ? বলে, মারি তো হাতী, লুটি তে। ভাণ্ডার ! সে এসে বসে তোমার ওই পাটের ফোটর ব্যবসা করবে ? তা ছাড়া তার এখনো রাজ্যের দেন । কলকাতা ছেড়ে আসবার জো নেই। —কত টাকা দেন, ঠাকুরপো ? —তা অনেক। নালিশ হয়েছে তিন-চারটে—জেলে যেতে না হয় ! অনঙ্গ শিহরিয়া উঠিয়া বলিল—বলো কি ঠাকুরপো ! এত দেন হল কি ক’রে ? ছবি চললে না ? —সে নানা গোলমাল। যে মেয়েটির ওপর ভরসা ক’রে ছবি তৈরী করা হচ্ছিলো, তার হয়ে গেল বিয়ে । সে আর ছবিতে নামলো না, অন্ত একটি মেয়েকে দিয়ে সে পার্ট করানো হতে লাগলো—ছবি একরকম ক'রে হয়ে গেল। কিন্তু সকলেই জেনে গিয়েছিল যে, রেখা দেবী-মানে, সে মেয়েটি এ-ছবিতে শেষ পর্যন্ত নেই—ছবি তেমন জোরে চললো মা । গদাধর ৰজ্ঞ ভূল করলে—একটি খুব নামজাদা অভিনেত্রী ইচ্ছে ক'রে ছবিতে নামতে চেয়েছিল,