পাতা:বিভূতি রচনাবলী (একাদশ খণ্ড).djvu/২৬২

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

२8९ বিভূতি-রচনাবলী —তামাক দেব বাবা ? —এখন না। চিড়েভাঙ্গ আগে খাই, তার পরে। বা, মোঁতাতটা নষ্ট করে দেবে ८बौभ ? এমনি স্বন্দর হাসিখুশির মধ্যে সেদিনের স্বৰ্য্য ডুবে গেল জামদার বড় বিলের ওপারে। সারাদিন কেউ কোথাও নেই। ভবতারণ চলে গিয়েছে। যা সামান্য দুটি টাকা দিয়ে গিয়েছে তাতে পাচদিনের চালও হবে না । উপেন ভটচাজ গিয়ে উঠেছেন মজুমদারদের ঠাকুরবাড়ীতে | একা রয়েছে তার পুত্রবধু সেই প্রকাও ভাঙা বাড়ীতে ছোট ছেলেকে নিয়ে রাত্রে। আবার কলাবাদুড় ওড়ে কড়িকাঠের খোপে খোপে, পেচা ডাকে ডুমুর গাছের নির্জন অন্ধ কারের মধ্যে, করুণা ঘুমের মধ্যে মাকে বলে—ও কিসের শব্দ মা ? ওঠ ওঠ—ওটা কি মা ? হিঙের কচুরি আমাদের বাসা ছিল হরিবাবুর খোলার বাড়ীর একটা ঘরে । অনেকগুলো পরিবার একসঙ্গে বাড়ীটাতে বাস করত। এক ঘরে একজন চুড়িওয়ালা ও তার স্ত্রী বাস করত । চুড়িওয়ালার নাম ছিল কেশব । আমি তাকে কেশবকাকা’ বলে ডাকতাম । সকালে যখন কলে জল আসত, তখন সবাই মিলে ঘড়া কলসী টিন বালতি নিয়ে গিয়ে হাজির হত কলতলায় এবং ভাড়াটেদের মধ্যে ঝগড়া বকুনি শুরু হত জল ভৰ্ত্তির ব্যাপার নিয়ে । বাবা বলতেন মাকে, এ বাসায় আর থাকা চলে না । ইতর লোকের মত কাও এদের ! এখান থেকে উঠে যাব শীগগির । কিন্তু যাওয়া হত না কেন, তা আমি বলতে পারব না । এখন মনে হয় আমরা গরিব বলে, বাবার হাতে পয়সা ছিল না বলেই । আমাদের বাসার সামনে পথের ওপারে একটা চালের আড়ত, তার পাশে একটা গুড়ের আড়ত, গুড়ের আড়তের সামনে রাস্তায় একটা কল । কলে অনেক লোক একসঙ্গে ঝগড়া চেচামেচি করে জল নেয় । মেয়েমামুষে মেয়েমানুষে মারামারি পর্য্যন্ত হতে দেখেছিলাম একদিন । এই রকম করে কেটেছিল সে-বাসায় বছরখানেক, এক আষাঢ় থেকে আর এক আষাঢ় পৰ্য্যন্ত । আষাঢ় মাসেই দেশের বাড়ী থেকে এসেছিলাম। দেশের বাড়ীতে বঁাশবাগানের ধারে বুতরো ফুলের ঝোপের পাশেই আমি আর কালী দুজনে মিলে একটা কুঁড়ে করেছিলাম । কালীর গায়ে জোর বেশি আমার চেয়ে, সে সকাল থেকে কত বোঝা আসস্তাওড়ার ডাল আর পাতা যে বয়ে এনেছিল ! কি চমৎকার কুঁড়ে করেছিলাম দুজনে মিলে, ঠিক যেন