পাতা:বিভূতি রচনাবলী (একাদশ খণ্ড).djvu/২৬৪

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

२88 বিভূতি-রচনাবলী থাকতে দিত না, বলত—তুমি এবার বাড়ী যাও । এবার অামার বাবু আসবে। প্রথমবার তাকে বলেছিলাম—বাবু কে ? —সে আছে । সে তুমি বুঝবে না। এখন তুমি বাড়ী যাও। আমার অভিমান হত, বলতাম—আস্থক বাবু আমি থাকব । কি করবে বাবু আমার ? —ন না, চলে যাও । তোমার এখন থাকতে নেই। অমন করে না, লক্ষ্মীটুি ! –বাৰু তোমার কে হয় ? ভাই ? —সে তুমি বুঝবে না। এখন যাও দিকি বাড়ী । আমার বড় কৌতুহল হত, কুস্কমের বাবুকে দেখতেই হবে। কেন ও আমাকে বাড়ী যেতে বলে ? একদিন তাকে দেখলাম। লম্বা চুল, বেশ মোটাসোটা লোকটা—হাতে একটা বড় ঠোঙায় এক ঠোঙা কি খাবার। কলকাতার দোকানে খাবার কিনতে গেলে ঐরকম পাতার ঠোঙায় খাবার দেয়। আমাদের দেশে ও পাতা নেই ; সেখানে হরি ময়রার দোকানে মুড়কি কি জিলিপি কিনলে পদ্মপাতায় জড়িয়ে দেয়। কুঙ্কম ঠোঙা খুলে আগে আমার হাতে একখানা বড় কচুরি দিয়ে বলল—এই নাও, খেতে খেতে বাড়ী যাও । এক কামড় দিয়ে আমার ভারি ভাল লাগল। এমন কচুরি কখনও খাই নি । আমাদের গ্রামের হরি ময়রা যে কচুরি করে, সে তেলে ভাজা কচুরি, এমন চমৎকার খেতে নয়। উচ্ছ্বসিত স্বরে বললাম—বাঃ! কিসের গন্ধ আবার ! কুসুম বললে—হিঙের কচুরি, হিঙের গন্ধ । ওকে বলে হিঙের কচুরি—এইবার বাড়ী 3 | কুমুমের বাবু বললে—কে ? —কলের সামনের বাড়ীর ভাড়াটেদের ছেলে। বামুনু । কুম্বমের বাবু আমার দিকে ফিরে বললেন—যাও খোক, এইবার বাড়ী যাও। এইবার ভাবলাম বলি, আমি থাকি না কেন, থাকলে দোষ কি ? কিন্তু কুস্কমের বাবুর দিকে চেয়ে সে কথা বলতে অামার সাহসে কুলোল না। লোকটা যেন রাগী মত, হয়তে এক ঘা মেরেও বসতে পারে। কিন্তু সেই থেকে হিঙের কচুরির লোভে আমি রোজ বাধা নিয়মে কুস্কমের বাবু আসা পৰ্য্যন্ত অপেক্ষা করি। আর রোজই কি সকলের আগে কুহম আমার হাতে দুখান কচুরি তুলে দিয়ে বলবে—যাও খোক, এইবার খেতে খেতে বাড়ী চলে যাও । n কুম্বমের বাবু বলত—আহ, ভুলে গেলাম। ওর জন্তে খাস্ত গজ দুখান জানৰ ভেবেছিলাম কাল। দাড়াও, কাল ঠিক আনব। আমার ভয় কেটে গেল। বললাম—এনে ঠিক কাল ? ফুস্কমের বাৰু হি হি করে হেলে বললে—জানব আনব ।