পাতা:বিভূতি রচনাবলী (একাদশ খণ্ড).djvu/২৬৬

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

रै8७ বিভূতি-রচনাবলী তোমার অদৃষ্ট নেই। দাও গো ওকে দুখান কচুরি। —গজ এনে কাল । —আনব গো বামুন ঠাকুর, ফলারে বামুন ! কাল অমৃতি জিলিপি আনিব । খেয়েছ অমৃতি ? -नां । —কাল আনব, এসে অবিপ্তি । —কাউকে ব’লো না কিন্তু । মা শুনলে আসতে দেবে না । —তোমার মা বকেন বুঝি এখানে এলে ? -छ्रे । কুস্বম তাড়াতাড়ি বললে, আরে ওর কথা বাদ দাও । ছেলেমানুষ পাগল, ওর কথার মানে আছে! তুমি বাড়ী যাও আজ খোকা । এই নাও কচুরি । খেতে খেতে যাও । —না, এখানে খেয়ে জল খেয়ে যাই, মা টের পাবে। —এখানে তোমাকে জল দেব না | রাস্তার কল থেকে জল খেয়ে যেও | কুস্কমের বাবু বললে—কেন, ওকে জল দেবে না কেন ? কি হবে দিলে ? কুস্কম কাজের স্বরে বললে—তুমি থাম। বামুনের ছেলেকে হাতে করে জল দিতে পারব নি। এই জন্মের এই শাস্তি । খাবার দিই হাতে করে তাই যথেষ্ট । আমার মনে মনে বড় অভিমান হল কুমুমের ওপর । কেন, আমি এতই কি খারাপ যে আমায় হাতে করে জল দেওয়া যায় না ? চলে আসবার সময় কুসুম বার বার বললে—কাল সকালে কিন্তু ঠিক এসো। কেমন ? আমি কথা বললাম না | - পরদিন সকালে গিয়ে দেখি কুসুম বসে সজনের ডাটা কুটছে । আমায় বললে—এস খোকা । —তোমার সঙ্গে আড়ি । —ওমা সে কি কথা ! কি করলাম আমি ? —তুমি যে বললে জল দেওয়া যায় না আমাকে জল খেতে দিলে না কাল। –এই ? বস বস খোকা। সে তুমি বুঝবে না। তুমি বামুন, তোমাকে জল আমরা দিতে পারি নে। বুঝলে ? কুলের আচার করছি, খাবে ? এখনও হয় নি। সবে কুল গুড় দিয়ে মেখেছি— এইভাবে কুস্কমের সঙ্গে আবার ভাব হয়ে গেল। কুলের আচার হাতে পড়তেই আমি রাগ অভিমান সব ভুলে গেলাম। দুজনে অনেকক্ষণ বসে গল্প করি। তার পর আমি উঠে মাখনের ঘরে যাই। মাখন কুস্কমের পাশের ঘরে থাকে। ওর ঘরটি যে কত রকমের পুতুল দিয়ে সাজানো একটা কাঠের তাকে মাটির আতা, আম, লিচু, কত রকমের আশ্চর্ঘ্য আশ্চৰ্য্য জিনিস। অবিকল আতা। অবিকল আম।