পাতা:বিভূতি রচনাবলী (একাদশ খণ্ড).djvu/২৬৯

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

८खङिङ्क्षि१ sås –তোমাদের দেশের বাড়ীতে কুল আছে ? আমাদের গায়ে কত কুলের গাছ! প্রভা এ কথার কোন উত্তর দিলে না। আবার নিজের মনে রাখতে লাগল। খানিক পরে সে একটা ঘটি উন্থনের মুখে বসিয়ে চা তৈরি করে মাসে আঁচল জড়িয়ে চুমুক দিয়ে চ। খেতে লাগল। আমায় একবার বললেও না আমি চা খাব কি না । অবিপ্তি আমি চা খাই নে, চায়ের সর খাই। মা আমায় চা খেতে দেয় না। চায়ের মধ্যে যে দুধের সর ভাসে, মা তাই আমাকে তুলে দেয়। প্রভ গল্প করতে লাগল ওদের দেশের বাড়ীতে কত গরু ছিল, কতখানি দুধ ওরা খেত, ওদের বাড়ীর ধারে ওদের নিজেদের পুকুরে কত মাছ ছিল। আর সেসব দেখতে পাবে न'।। ७ ।। হঠাৎ প্রভা একটা আশ্চৰ্য্য কাও করে বসল। বললে—অঙ্গল দিয়ে দুটো ভাত খাবে ? আমি ভয়ে ভয়ে বললাম—খাব । কুঙ্কম টের না পায় । ভা হেসে বললে—কুস্কমের আত ভয় কিসের ? টের পায় তো কি হবে ? তুমি খাও বসে । আমি সবে চালতের অঙ্গল দিয়ে ভাত মেখেছি, এমন সময় কুস্কমের গলার শব্দ শোনা গেল —ও প্রভাদি, বামুনদের সেই খোক তোর এখানে আছে? ওকে বাড়ী পাঠিয়ে দিই, কতক্ষণ এসেছে পরের ছেলে । আমি এটো হাতে দৌড়ে উঠে রান্নাঘরের কোণে লুকিয়ে রইলাম। প্রভা কিছু বলবার আগে কুসুম ঘরের মধ্যে ঢুকে আমাকে দেখতে পেল। বললে—ওকি ? কোণে দাড়িয়ে কেন ? লুকনো হল বুঝি ? এ ভাত মেখেছে কে অম্বল দিয়ে ? অ্যা— প্রভার দিকে চেয়ে আশ্চৰ্য্য হয়ে বললে—আচ্ছা প্রভাদি, ও না হয় ছেলেমানুষ, পাগলা । তোমারও কি কাণ্ডজ্ঞান হারিয়ে গেল ? কি বলে তুমি ওকে ভাত দিয়েছ খেতে ? প্রভা অপ্রতিভ হয়ে বললে—কেবল চালতে চালতে করছিল, তাই ভাবলাম অম্বল দিয়ে দুটো ভাত— ë —না, ছিঃ ! চল আমার সঙ্গে খোকা । এ জন্মের এই শাস্তি আমাদের, আবার তা বাড়াব বামুনের ছেলেকে ভাত দিয়ে ? " চল—হাতে এটো নাকি ? খেয়েছ বুঝি ? আমি সলজ্জ স্বরে বললাম—সা | —চল হাত ধুইয়ে দিই— কুক্কম এসে আমার হাত ধরে বাইরের দিকে নিয়ে যাবার উদ্যোগ করতে প্রভা বললে— আহ, মুখের ভাত কটা খেতে দিলি নি ওকে সবে অম্বল দিয়ে দুটাে মেখেছিল— —না, আর খেতে হবে না । চল । মায়ের শাসনের চেয়েও যেন কুকুমের শাসন বেশি হয়ে গেল। মুখের ভাত ফেলেই চলে জালতে হল। উঠোনের এক পাশে নিয়ে গিয়ে আমার হাত ধুইয়ে দিতে দিতে বললে—তোমার অত খাই খাই বাই কেন খোকা? ওদের ঘরে ভাত খেতে নেই সে কথা মনে নেই তোমার ।