পাতা:বিভূতি রচনাবলী (একাদশ খণ্ড).djvu/২৭৩

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

জ্যোতিরিঙ্গণ ఇt —কাল আবার আসব। কেমন তো ? ه --م ي —এসো । আমি না বললে জানলার কাছে এসো না । —তাই করব। আমি রাস্তায় চুপ করে দাড়িয়ে থাকব। শিস দিতে পার ? —উহু! আমি হাত দেখালে এসো। | - পরের দুদিন কুম্ম ঠিক আসত বিকেলবেলা । একদিন প্রভা দেখতে চেয়েছিল বলে ওকেও সঙ্গে করে এনেছিল। প্রভাও দুটো কমলালেবু দিয়েছিল আমায়, মিথ্যে কথা বলব না। বালিশের তলায় লেবু লুকিয়ে রেখে দিতাম, মা ঘরে না থাকলে খেয়ে ছিবড়ে ফেলে দিতাম রাস্তার ওপর ছুড়ে । সেরে উঠে দুদিন কুস্কমের বাড়ী গিয়েছিলাম । তার পরেই এক ব্যাপার ঘটল। তাতে আমাদের কলকাতার বাস উঠে গেল, আমরা আবার চলে এলাম আমাদের দেশের বাড়ীতে । মা একদিন সোডাওয়াটার-এর বোতল খুলতে গিয়ে হাতে কঁাচ ফুটিয়ে ফেললে। সে এক রক্তারক্তি কাও । হাতের কজি থেকে ফিনকি দিয়ে রক্ত ছুটতে লাগল ! বাসার সব লোক ছুটে এল বিভিন্ন ঘর থেকে। কোণের ঘরের বিপিনবাবু এসে মার হাতে কি একটা ওষুধ দিয়ে বেঁধে দিলে। কিন্তু মায়ের হাত সারল না। ক্রমে হাতের অবস্থা খুব খারাপ হয়ে উঠল । মা আর রান্না করতে পারেন না, যন্ত্রণায় কাদেন রাত্রে । ডাক্তার এসে দেখতে লাগল। আমার মামার বাড়ীর অবস্থা ভাল। চিঠি পেয়ে মেজমামা এসে আমাদের সকলকে নিয়ে চলে গেলেন মামার বাড়ীতে । আধাঢ় মাসের শেষ । তাল দু-একটা পাকতে শুরু হয়েছে। মামার বাড়ীর গ্রামে মস্ত বড় একটা পুকুর আছে মাঠের ধারে, তার পাড়ে অনেক তালগাছ । আমি বেড়াতে গিয়ে প্রথম দিনই একটা পাকা তাল কুড়িয়ে পেলাম মনে আছে । মার হাত সেরে গেল মামার বাড়ী এসে । ভাদ্রমাসের শেষে আমরা দেশের বাড়ীতে চলে এলাম। কলকাতা আর যাওয়া হল না। বাবাও সেখানকার বাস উঠিয়ে দেশে চলে এলেন । ধদীর্ঘ ত্রিশ বছর পরের কথা। " কলকাতায় মেসে থাকি, আপিসে কেরানীগিরি করি, দেশের বাড়ীতে স্ত্রী-পুত্র থাকে। আমার পুরনো কলেজ-আমলের বন্ধু শ্ৰীপতির সঙ্গে বসে ছুটির দিনটা কি গল্প করতে করতে প্রপতি বললে—কাল ভাই সন্ধের পর প্রেমচাঁদ বড়াল ইঁট দিয়ে আসতে আসতে—দুধারে মুখে রং-হরিবল । —আমিও দেখেছি। ঐ পথ দিয়েই তো আলি। আমি কিন্তু ওদের অন্য চোখে দেখি। ওদের আমি খুব চিনি। ওদের ঘরে এক সময়ে আমার যথেষ্ট যাতায়াত ছিল। আমার বন্ধু আশ্চর্ঘ্য হয়ে বললে—তোমার ! →ষ্ট্যা ভাই, আমার । মাইরি বলছি ।