পাতা:বিভূতি রচনাবলী (একাদশ খণ্ড).djvu/২৯৫

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

জ্যোতিরিক্ষণ ՀՊծ কাজকর্ম সেরে সব দিক দেখতে তো পারি নে। যত দূর পারি, চিরকাল যা হয়ে আসছে, তাই হবে । —একটু মন দিয়ে–মানে, উনি বুড়ো মানুষ— —আমি তা জানি । যা পারি হবে । ভেব না। বাবা ঠাকুরদাদার কাছে বিদায় নেবার সময় কত দিন দেরি হবে তা ঠিক বললেন না। বললে ঠাকুরদাদা হয়তো যেতে দেবেন না কিংবা ব্যস্ত হয়ে পড়বেন । বাবা যখন বেরুলেন, ঠাকুরদাদা বললেন—অ হরিশ, কবে ফিরবি ? র্তার চিরন্তন প্রশ্ন । —এই যত শীগগির হয় বাবা, আপনি ভাববেন না। ঠাকুরদাদাকে ফেলে কোথাও গিয়ে বাবা স্বস্তি পেতেন না আমি জানি । ঠাকুরদাদা নাকি তিন বছর বয়স থেকে বাবা ও মার মত করে মানুষ করেন বাবাকে ঠাকুরমায়ের মৃত্যুর পরে। বাবা যেন ভাবতেন ঠাকুরদাদা শক্রপুরীর মধ্যে বাস করছেন—চতুর্দিকে শক্রবেষ্টিত অবস্থায়—একমাত্র আপনার জন তিনি নিজে । চোখে চোখে রাখতেন এইজন্তে সৰ্ব্বদা । কারও হাতে ছেড়ে দিয়ে বিশ্বাস করতেন না। বলা বাহুল্য, ঠাকুরদাদা তো নিজেকে অসহায় শক্রবেষ্টিত বলে মনে করতেনই । বাবা এবার বাড়ী ফিরতে বড় দেরি করতে লাগলেন। অবশেষে যখন ফিরলেন তখন গরুর গাড়ী করে ভীষণ অস্বস্থ অবস্থায় । ঘোর জর। জরের ঘোরে বলতে লাগলেন—বাবাকে কেউ বলো না আমি অসুস্থ হয়ে বাড়ী এসেছি । ঠাকুরদাদা কিন্তু আন্দাজে মাঝে মাঝে বাবাকে ডাক দিতেন। বুঝতে পেরেছিলেন কিনা কি জানি । —অ হরিশ ! আমার জন্তি কি আনলি, অ হরিশ ? বাবা ঠিক শুনতে পান। জরে ধুকতে ধুকতে বললেন—বাবা বাঁচতে আমার যেন কিছু না হয়, হে ভগবান ! মরেও স্বখ পাব না অস্কখ বড় বাড়ল। জেলা ཨ་༽“ཚ༢༡དང་༥༣as། সংসারের পুজি ভেঙে বাবার চিকিৎসা হল । একদিন বড় বাড়াবাড়ি হল । ঠাকুরদাদাকে আর দেখাশুনো করার লোক নেই, বাবাকে নিয়েই সবাই ব্যস্ত। গ্রামের ত্রিলোচন ঠাকুরদাদার কাছে বসে তাকে বাজে গল্পে ভুলিয়ে রাখলে । R সবাই বলতে লাগল—স্থবোধ আর বঁাচবে না। আহা, বুড়োর কি কপাল! বাবার মৃত্যু হল শেষ রাত্রে। ঠাকুরদাদা তার কিছুই জানেন না । গভীর ঘুমে অচেতন। খুব ভোরে বাড়ীতে এসে জিলোচন চক্রবর্তী ঠাকুরদার হাত ধরে ছুতো করে বাইরে কোথায় নিয়ে গেল ।