পাতা:বিভূতি রচনাবলী (একাদশ খণ্ড).djvu/২৯৮

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

বিভূতি-রচনাবলী שר א গৃহস্বামী বললেন–র্হ্যা হে মিত্তির, সেখানেও একবার নিয়ে যেও তো একে ৷ পূর্বের ভদ্রলোকটি বললেন—না নিয়ে গেলে কনট্রাস্টট তৈরি হবে না যে। উনি বুঝবেন কি করে যে, আমরা কোন নরকে, আর তারা কোন স্বর্গে! বোধ হয় মিঃ বাক্ষর ওখানে আপনার নিমন্ত্রণ আছে। যেতেই হবে। খবর দেবে এখুনি । —স্বৰ্গই বটে। শহরের দক্ষিণে । খোলা জায়গায়। গিয়ে দেখবেন কি চমৎকার হাওয়া ! কি সবুজ লন। অর্নামেন্টাল ট্ৰিজ, বড় বড় কাচের সার্সি-খড়খড়িওয়ালা জানালাদরজা, লাইট, ফ্যান—সেসব অন্য ব্যাপার। আসল কথা সেসব তো আপনার আমার জন্তে তৈরি নয়, সে ছিল সাহেবদের জন্যে। সাদা চামড়া গায়ে থাকলেই অফিসার্স কোয়াটার্সে তার জায়গা—কি বড় কি ছোট, কোন সাহেব কখনও তিন নম্বর চার নম্বরে থাকত নী— ছু নম্বর এক নম্বর তো দূরের কথা। কি করে শোষণ করেছে দেশটা! আমাদের মহিষ বলেই গ্রাহ করে নি । বেলা গেল । পয়লা বৈশাখের উৎসবসভা এবং সেই সঙ্গে—‘বিচিত্রানুষ্ঠান’ বলে একটা কথা সব জায়গায় বডড চলেছে—সেই ‘বিচিত্রানুষ্ঠান । যথারীতি সবই ছিল। সভাপতি-নির্বাচন, উদ্বোধন-সঙ্গীত, মাঝে মাঝে বিকল হওয়া মাইক, রবীন্দ্র-সঙ্গীত ( ভুল স্বরে ), আধুনিক কাব্য-সঙ্গীত (কোন প্রকার স্বর নেই তাতে ), বক্তৃতা ; তার পরে আবার ‘বিচিত্রাতুষ্ঠান । সৰ্ব্বশেষে সভাপতির অভিভাষণ দিতে যখন উঠলাম, তখন রাত দশটা ৷ লোক জড় হয়েছে বন্থ, কয়েক হাজার হবে । বিচিত্রাতুষ্ঠানের পরে কেউ দাড়াত না সভাপতির অভিভাষণ শোনবার জন্তে–কিন্তু সভার উদ্যোক্তারা ভারি চালাক, তার সবশেষে রেখেছিলেন একটি অতি লোভনীয় ব্যাপার এবং সেটা বড় বড় অক্ষরে কার্য্যসূচীতে ছাপিয়েও দিয়েছিলেন ; সেটি হল ‘জলযোগ’ । অর্থাৎ দালদায় ভাজা বঁদে আর দরবেশু/*মিঠাই, ব্যস। শালপাতার ঠোঙায় ইতিমধ্যেই স্বেচ্ছাসেবকদল সকলের পেছনের সারির ছেলেমেয়েদের মধ্যে বিলুতে শুরু করে দিয়েছে । দু একজন চেচিয়ে বলতে লাগলেন—বডড গোলমাল হচ্ছে। দেওয়া বন্ধ কর এখন—দেওয়া दक्क कब्रु আর দেওয়া বন্ধ কর! ঐ জন্যেই আসা। আর ঐ ‘বিচিত্রানুষ্ঠান'-এর জন্যে। কে এসেছে সভাপতির বাজে ভ্যাজ-ভ্যাজ শুনতে ! ছু একবার হাততালি পড়ল। কিন্তু পিছনের ছেলেমেয়ের সারি ‘জলযোগ’-এর ঠোঙার জন্যে অধীর হয়ে উঠেছে। সংক্ষেপে সেরে বসে পড়লাম । সভাপতিকে ধন্যবাদ দেওয়াও শেষ হয়ে গেল । একজন ভদ্রলোক এসে বললেন—চলুন, একটু জলযোগ—হেঁ হেঁ—এই পণে—জাজে+