পাতা:বিভূতি রচনাবলী (একাদশ খণ্ড).djvu/৩০

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

বিভূতি-রচনাবলী هذ কান্না-ধর গলায় বললে—শশাঙ্কদ আমায় বঁাচাও। তুমি আমার বড় ভাই। —কি হয়েছে ? ব্যাপারটা কি শুনি। —আমার নামে নাকি কি উঠেচে কথা। আমায় নাকি পুলিশে পাঠাবে, চৌকিদার দিয়ে ধরে থানাতে নিয়ে যাবে। সবাই বলাবলি করচে। তোমার পায়ে পড়ি দাদা—আমি কোনো দোষী নই—বঁাচাও আমায় । শাস্তিকে দেখে মনে দুঃখ হোল, রাগও হোল। লালমোহন কাকার মেয়ে গায়ে বসে এমন উচ্ছন্ন যাচ্চে। এ যতই এখন মায়া কান্না কাছক-আসলে এ মেয়ে ভ্ৰষ্ট, কলঙ্কিনী । ওর কান্না মিথ্যে ছলনা ছাড়া আর কিছুই নয়। ছঃখ হোল ভেবে, লালমোহন কাক এক পঞ্চাশ বছরের বুড়োর সঙ্গে তেরো বছরের মেয়ের বিয়ে দিয়ে ভবের হাটবাজার তুলে দিয়ে স্বর্গে চলে গেলেন—দুবছর চলে না যেতে যেতেই জামাই শ্বশুরের অনুসরণ করলেন। পনেরো বছরের মেয়ে চালাঘরে মায়ের কাছে ফিরে এল সিথির সিদ্ধর মূছে। গরীব মা, নিজের পেট চালায় সামান্য একটু জমি-জমার আয়ে। ভাইও আছে—কিন্তু সে নিজের স্ত্রী-পুত্র নিয়ে আলাদা বাস করে। মাকেই খেতে দেয় না—তায় বিধবা বোন ! এ অবস্থায় কেউ যদি মেয়েটিকে প্রলোভন দেখায়—বিপথে পা দিতে সে মেয়ের কতক্ষণ লাগে ? মুখে কড়া স্বরে বললুম-শাস্তি, রাস্তাঘাটে সে সব কথা হয় না। আমার বাড়ীতে যেও, ড়োমার বউদি থাকবেন, সেখানে কথাবাৰ্ত্ত হবে ; তবে তোমাকে থানাপুলিশের ভয় যদি কেউ দেখিয়ে থাকে সে মিছে কথা । পুলিশের এতে কি করবার অাছে ? বাড়ী যাও, ছিঃ ! শান্তি তবুও কান্না থামায় না। আকুল মিনতির স্বরে বললো—একটু দাড়াও দাদা, পায়ে পড়ি, একটু দাড়াও ! 1. আঃ কি মুশকিল ? শাস্তির সঙ্গে নির্জনে কথাবার্তা বলতে দেখলে কেউ কিছু মনেও করতে পারে। ও মেয়ের চরিত্র কেমন জানতে আর লোকের বাকী নেই। বললাম—বিশেষ কিছু বলবার অাছে তোমার ? —শশাঙ্কদা, তুমি আমায় বাচাবে ? —হ্যা হ্যা—হবে, হবে । কোনো ভয় নেই । পরক্ষণেই শাস্তি এক অদ্ভূত ধরনে আমার মুখের দিকে চেয়ে বলে—সত্যি শশাঙ্কজা ? ख्धांशि-श्रांभांटक আমি এতক্ষণ বুঝতে পারিনি ও কি বলতে চাইচে, এইবার ওর কথার স্বরে ও মুখের ভাবে বুঝে নিয়ে অবাক হয়ে ওর মুখের দিকে চাইলাম। আমি ডাক্তার, ও সাহায্য চাইচে জামার কাছে, কিন্তু এ সাহায্য আমার দ্বারা হবে ও ভাবলে কেমন করে ? আশ্চৰ্য্য! শান্তি মুখ নীচু করে ধীরে ধীরে পায়ের আঙ্গুল দিয়ে মাটি খুঁড়তে লাগলো। অবশেষে আমার মুখে কথা ফুটলো। আমি বললাম—তুমি এতদূর নেমে গিয়েচ শাভি ।