পাতা:বিভূতি রচনাবলী (একাদশ খণ্ড).djvu/৩১৩

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

জ্যোতিরিঙ্গণ - ২৯6 —কি রকম বলে, হাসি পায় । —ও যা বলে, ওই ঠিক উচ্চারণ। আমাদের মুখেই হয় না। ও ঠিক বলে। ও যা বলে তাই শিখবি। থনটন কাকা আমাদের গায়ে পুরনো হয়ে গেল। রামায়ণ-গানের আসরে, কবির আসরে সাহেব গিয়ে বসত সকলের সামনে। করুণ গান শুনে হয়তো খুব হাততালি দিলে হাসিমুখে— এই রকম বুঝত। একখানা মোট বই বের করে মাঝে মাঝে পড়ত। বাবা বলতেন, ও বইকে বলে বাইবেল । সাহেবদের ধৰ্ম্মপুস্তক । সন্ধ্যের সময় ডাকত—বীণা— দিদি এসে বলত—-কি থলটন কাক ? —খাটে ডাও ৷ ——এখনও রান্না হয় নি । মুড়ি দেব ? —নিয়ে এস । টেল নো ৷ —না, তেল দেব না | গুড় দেব ? —গুড় ডাও ৷ এইভাবে দু বছর কাটল আমাদের বাড়িতে। তখন সে বেশ বাংলা শিখেছে, এমন কি নিজের নাম বাংলায় লিখত—জেমস থরনটন। আমি বললাম—ও কাকা, ভুল হয়েছে । থরনটন কি ? থর্নটন হবে । এই দেখ–একে বলে রেফ, এই বসাও । এবার হল থর্নটন। —নো, নো রেফ অ্যাও অল দ্যাট । এই ডেথ— —বেশ, দেখি— সাহেব লিখল—থরনটন— —আমার দিকে চেয়ে বললে, ঠিক ? —না ঠিক না । এই দেখ– —ও, হাং—হোক । আমি লিখব-টেমার রেফ আমি লিখব না। —লিখে না। লোকে বলবে ধরনটন— —লেট দেম । বলটে ডাও । —দিলাম । সেবার জ্যৈষ্ঠ মাসের গরমে তাড়াতাড়ি সব আম পেকে গেল। আমি বললাম—থনটন কাক, আম পেড়ে নিয়ে আসি চল পুকুরধারের বাগান থেকে । —আমি সব পাক আম খাব ৷ —খেও । লগা নিয়ে চল, আম পাড়তে হবে । কিন্তু আম পাড়তে যাবার আগে পিওন এসে একখানা চিঠি আমার হাতে দিয়ে বললে,