পাতা:বিভূতি রচনাবলী (একাদশ খণ্ড).djvu/৩৭০

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

ტè ა - বিভূতি-রচনাবলী ওর বয়েস, নাম টুম্ন, যেমন দুষ্টু, তেমনি বাচাল। মুখের বিরাম একদও নেই। বিষম পিতৃভক্ত, বাবা ছাড়া জানে না। সর্বদা বাবাকে চায়। ওর মা বলে, কাকে তুমি বেশি ভালবাসো খোকা ? -—বাবা মতিলালকে । —আর মা অন্নপুন্নোকে নয় ? —ই-উ-উ । —তবে ? —-বাবা মতিলালকে । —ত তো সবই বুঝলাম । আমি বুঝি ভেসে এইচ ? আমি বুঝি ভালবাসার যুগ্য মই, হ্যারে—এইবার বল, কাকে ভালোবাসিস্ ? —বাবাকে, বাবা মতিলালকে— —বা, বেশ ছেলে দেখচি । খোকন, সোনার খোকন, তুমি কার খোকন ? —বাবা মতিলালের । —আর কার খোকন ? —মার ! —মার কি ভাগ্যি । এই ধরণের কথা রোজই প্রায় হয়। এসব থেকে এইটুকুই বোঝা যায় যে, টুকু বাবার একটু বিশেষ রকমের হাওটো । বাবা ছাড়া সে কাউকে চায় না বড় একটা, বাবার সঙ্গে নাওয়া, বাবার সঙ্গে খাওয়া, বাবার সঙ্গে ঘুমেনে । মতিলাল এতে খুব সন্তুষ্ট নয় । তার হিসেবপত্রের খাতা মোটেই এগোয় না, এক দিনের কাজে {৩ল দিন লাগে । বিকেলে মতিলাল হয় তো চাইচে নদীর ধারে কি কোনো বন্ধুর বাড়ী একটু বেড়িয়ে আসবে, ছেলে এসে সামনে দাড়িয়ে বল্লে—ও বাবা, কি করচিস ? —কিছুই করিনি। দাড়িয়ে আছি । —বেরিয়ে চলো । আমি যাবো । —Si | —আমি যাবো বাবা । —ন । যায় না । খোকা ততক্ষণ মতিলালের ক্টোচার কাপড় হাতের মুঠোর মধ্যে পাকিয়ে ধরে ঠোট ফুলিয়েচে । চোখে তার করুণ আবেদন ও আশার চাউনি। কে পারে তার কথা ন গুনে ? মতিলালকে সঙ্গে নিতেই হয়। বাবার কাধে উঠে ফুৰ্ত্তি তার। তখন সে জেনেছে, বাবার সঙ্গে বেড়াতে যাচ্চে সে অনেক দূরে কোথাও । তার পরিচিত জগতের ক্ষুদ্র গণ্ডীর বাইরে ।