পাতা:বিভূতি রচনাবলী (একাদশ খণ্ড).djvu/৩৮

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

3b" বিভূতি-রচনাবলী কথার আমদানি করলে ? বিষ কি হবে ? খেয়ে মরবে তো ? তা অনেক রকম উপায় আছে মরবার। আমায় এর জন্যে দায়ী করতে চাও কেন জিজ্ঞেস করি ? ভক্তি আছে বলে বুঝি ? শাস্তি বললে—ঠিক বলেছ দাদা। আর তোমাদের বোঝা হয়ে থাকবে না। দাড়াও একটু পায়ের ধুলো দ্যাও দাদা— 魯 কথা শেষ করেই শাস্তি আমার পায়ের উপর উপুড় হয়ে পড়ে দুহাতে পায়ের খুলে। নিয়ে মাথায় দিলে । মনে হোল, ও কাদচে, কারণ কথার শেষের দিকে ওর গলা কেঁপে গেল যেন | - পায়ের ধুলো নিয়ে মাথা তুলেই ও আর কোন কথাটি না বলে চলে যেতে উষ্ঠত হোল। আমার তখন রাগট। কেটে গিয়ে একটু ভয় হয়েছে। মেয়ে-মানুষকে বিশ্বাস নেই, সত্যি সত্যি মরবে না কি রে বাবা । বললাম—দাড়াও, একটা কথা আছে শান্তি ! শাস্তি ফিরে দাড়িয়ে ঘাড় বেঁকিয়ে বললে—কি ? —সত্যি সত্যি মরো না যেন তাই বলে । —তা ছাড়া আমার কি আছে করবার ? সমাজের পথ আজ বন্ধ হোল, সব পথ বন্ধ হোল, বেঁচে থেকে লাভ কি বলো ?— —সমাজের পথ কে বন্ধ করলে ? অন্য লোকের দোষ দাও কেন, নিজের দোষ দেখতে পাও না ? —আমি কারো দোষ দিচ্ছি নে শশাঙ্কদা, সবই আমার এই পোড়া অদৃষ্ট্রের দোষ— অদৃষ্ট্রের দোষ –কথা শেষ করে শান্তি নিজের কপালে হাতের মুঠো দিয়ে মারতে লাগলো, আর থামে না । i ভাল বিপদে পড়ে গেলাম এ সন্ধ্যাবেলায় পথের মধ্যে । বাধ্য হয়ে ওর কাছে গিয়ে ধমক দিয়ে বললাম—এই ! কি হচ্ছে ও সব ? শাস্তি তবুও থামে না, আমি তখন আর কি করি, ওর হাতখানা ধরে ফেলে বললাম— ছি, ও রকম করতে নেই—যাও, বাড়ী যাও—কি কেলেঙ্কারী হচ্ছে এ সব ? শাস্তি বললে—না দাদা, আর কেলেঙ্কারী করে তোমাদের মুখ হাসাবে না। নিজের ব্যবস্থা নিজেই করছি শীগগির-বলে আবারও সেই রকম অদ্ভুত হাসলে। —আর যাই করে, আত্মহত্যা মহাপাপ, ও কোরো না— —কে বললে ? —আমি বলছি । শাস্ত্রে আছে । শাস্তি হেসে বললে—আচ্ছ। দাদা, তোমরা শাস্তর মানে ? —মানি । —আত্মহত্যে হলে কি হয় ?