পাতা:বিভূতি রচনাবলী (একাদশ খণ্ড).djvu/৩৮১

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

কুশল পাহাড়ী O©\ হবে কাচের কারখানা-এখান দিয়ে রাস্তা বেরুবে•••বাসিন্দা- ভদ্রলোকদের জমি ওইদিকে হবে---কোনো-কোনো জমিতে তরি-তরকারির আবাদ হবে, ইত্যাদি । সবটাই আকাশকুস্কম। কেউ আসবার কোনো আগ্রহ দেখালে না এখানে । দেখাবেও না, তা বেশ বুঝলাম । ক্রমে আমি এদের পরিবারের সব খবর জানলাম। রামলাল ব্রাহ্মণের তিনটি পুত্র । কলকাতায় ওই বুদ্ধের বড় কারবার ছিল, সে-সব বেচে দিয়ে এই ভরহেচ, নগরের পত্তন হয়েচে । ব্যাঙ্কে এখনো অনেক টাকা । ছেলেরা কেউ রাচি, কেউ বিকানীরে থাকে বড় ছেলের পুত্র দরিরাম এই ভরহেচ, নগরেই বাস করে । সাবিত্রী বলে ছোট খুকী তারই মেয়ে । পুত্রবধূর নাম অনস্বয়া, খুব মোটা, মাঝে মাঝে ঝোল ঘোমটা দিয়ে মোটরে কখনো রীচি, কখনো হাজারীবাগ যায়। রামলালের স্ত্রী নেই, অনস্বয়া বাঈ খুব সেবা করে। আরও তিন-চারটি নাতি-নাতনী আছে, তারা ঠাকুরদাদার বড় একটা ঘোষ নেয় না । অনস্বয়া বাঈ আমাকেও আড়াল থেকে বেশ আদর-যত্ন করে, সেটা আমি বুঝতে পারি। লোক এরা খারাপ নয়। ঘি, পুরী, চাটনি, বড়-বড় লঙ্কার আচার, বজরার রুটি, হালুয়া, কিশমিশ-মিশ্রিত দুধ, খুব খেয়ে পনেরো দিনের মধ্যে আয়নায় নিজের মুখ আর নিজে চিনতে পারিনে। একদিন খেতে বসেচি, অনস্বয়া বাঈ আড়াল থেকে বলে পাঠালে, আমি অত কম খাই কেন ? আমি বল্লাম—সে কি ! কত খাবো ? খুব খাচ্চি । BBB BBSDSSSSS BBB BB BBBS BBB BB BBB BBS BBBS BB খেতে হবে । —মুসীমাকে বলে, তার কথার ওপর আমি কথা বলতে পারিনে। তিনি যা বলবেন আমি করবো । —বাঙালীরা খুব মছলি খায়, এখানে মছলি যখন মেলে না, তখন দুধ ঘিউ তার বদলে খুব খেতে হবে । —যতটা পারি নিশ্চয় খাবো । অনহয়া বাঈয়ের যত্ব আমি ভুলবে না। যদিও কখনো আমার সামনে সে বেরোয় নি, তবু আমার সবরকম স্থখ-স্থবিধা আড়াল থেকে এমন তদারক করতেও আমি কাউকে দেখিনি । এর সত্যি একটি অদ্ভূত ভালো পরিবার। এ ধরনের মানুষের দল যে এই স্বার্থপর পৃথিবীতে এসব দিনেও বর্তমান আছে, তা জানতাম না। আমাকে ওরা জমি দিয়ে বাস করাবে, আমার উন্নতি ক’রে দেবে—রামলাল ব্রাহ্মণ এ-সব আশ্বাস কত দিতো আমাকে । রামলালের স্বপ্ন ভেঙে দিতে আমার কষ্ট হত । আমি বেশ দেখতে পেতাম ভরহেচ, নগরের পরিণাম । এই বুড়ে যতদিন বেঁচে, ততদিন এই নগরীর আয়ু। তার পরেই এই ভরহেচ, নগরের রাজপথে ছোটনাগপুর অরণ্যের নামকরা