পাতা:বিভূতি রচনাবলী (একাদশ খণ্ড).djvu/৩৯৪

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

©ዓ8 বিভূতি-রচনাবলী —আপ, লোগোকো খান-কি ক্য। হোগা? --তুম্কে বানানে পড়েগা । সকেগা নেই ? --কাহে নেই হুজুর । মগর হিয়। কুছ নেহি মিলেগ । না চাল, ন দাল । —ঘাবড়াও মাং । সব চিজ হায় হামলোগোক গাড়িমে। তুম্ একঠো মুরগী মাগাঁও হাটিয়া সে—হঁ্যা ? --দিজিয়ে দো রুপেয়া । গাও সে মাগায়েঙ্গে । —বোট কা চাভি কাহা ! ---ও খুলা হুয়া হয় । লে যাইয়ে ৷ একঠো খাতামে সহি করণে হোগা । - 58-- 尊 ট্যাম্পা খাতা সই করিয়ে চাবি আনতে চলে গেল । আমরা করণ সিংকে জিনিসপত্রের তত্ত্বাবধানে নিযুক্ত করে বোট ছেড়ে দিলাম । সরোবরাট সব জায়গায় সমান চওড়া নয়, বোট নিয়ে যত আমরা ওর দৈর্ঘ্য ধরে এগিয়ে চল্লাম, তত বাদিকের প্রস্থ বাড়তে লাগলো—শেষে এমন হল যে ওপারের গাছপাল ছোট দেখাতে লাগলো, ওপরের পাহাড় হঠাৎ যেন বহুদূরে চলে গেল । হ্রদের জলে ছোট ছোট ঢেউয়ের স্বষ্টি করে পাহাড়ের দিক থেকে বাতাস বইচে। ললিত বল্লে—ভাই, স্নান করা দরকার । বোট লাগাও কোন এক জায়গায় । আমাদের দুজনেরই দৃষ্টি আকৃষ্ট করেছিল ওপারের অপূৰ্ব্ব বন-সৌন্দর্য্য । এপারের তীরে তৃণভূমিই বেশি, মাঝে দু-চারটা বড়-ছোট গাছ । ললিতকে বল্লাম—চলে ওপরে বোট নিয়ে । ওখানে যাওয়া যাবে । ক্ষুদ্র বীচিসস্কুল হ্রদটি পার হতে প্রায় চল্লিশ মিনিট লাগলো । এইখনেই হ্রদটির প্রস্থ সর্বাপেক্ষ বেশি। পাহাড়ময় তীরভূমি যত কাছে আসতে লাগলো, ততই তার ঘন সবুজ রূপ আমাদের বাঙালী মনকে টানতে লাগলে ওর দিকে—এসব মরুভূমির মত উষর দেশের কঙ্করময় রুক্ষতার মধ্যে খামল বনানীর বৈচিত্রা চোখ জুড়িয়ে দেয় কি ভাবে, তা উপলব্ধি করার বস্তু, শুধুই কানে শুনে বা বইয়ে পড়ে তা বোঝা সম্ভব নয়। ওপারে আমরা যখন পৌছে গেলাম তখন দিন ও রাত্রির সন্ধিক্ষণ । একটু পরেই একাদশীর চাদের জ্যোৎস্না ফুটে উঠলে জলে, বনে, পাহাড়ে সর্বত্র । ওপারে পৌঁছে ডাঙায় নেমে দেখি, তীরভূমি কি স্বন্দর ! পাষাণময় আগাগোড়া, সমতল laterite পাথরের বেদী যেন মস্ত বড়। ঠিক পেছনেই বন শুরু হয়েচে, একেবারে অনতিদুরন্থ শৈলসান্ত পৰ্য্যন্ত বিস্তৃত বনভূমি। পৰ্যাণময় চত্বরের দৈর্ঘ্য একশো হাতেরও বেশি, চওড়ায় প্রায় দশ-বারে হাত । আমাদের স্নান ও বিশ্রামের জন্যে প্রকৃতি যেন পাথরের ঘাট বঁধিয়ে দিয়েছে। কি ঠাণ্ডা জায়গাটি, বনের কি স্বন্দর স্নিগ্ধ হাওয়া, কুড়চিফুলের কি ঘন স্বাস জ্যোৎস্নামাখা বাতাসে । আমরা জলে নামলাম। যতদূর যাই পায়ের তলায় শুধুই পাথর, যেন সিমেন্ট বাধানে৷