পাতা:বিভূতি রচনাবলী (একাদশ খণ্ড).djvu/৪৫৩

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

कूर्शण श्रांशंफ़ौ gèÐ গোধূলির পূর্বমুহূৰ্ত্ত উপস্থিত হয়েছে, তা কিছু বলতে পারি নে। যেতে হবে এখনো অনেকটা রাস্তা, আর দেরি করলে পথেই অন্ধকার হয়ে যাবে, বৃষ্টিও আসতে পারে, কারণ বর্ষাকাল, শ্রাবণ মাস। বড় রাস্তায় উঠে সত্যিই দেখলাম আডড দিতে গিয়ে সময়ের আন্দাজ বুঝতে পারি নি। তাড়াতাড়ি হাটতে লাগলাম, পশ্চিম আকাশে মেঘ করে আসচে । চাপাবেড়ে ছাড়িয়েচি, রাস্তায় জনমানব নেই, পথের দুপাশে ঘন জঙ্গলে পটপটির ফুল ফুটেচে, গন্ধ ভেসে আসছে জোলো বাতাসে, শেয়াল খপ্ খপ্‌ শব্দ করে চলে গেল পাতার ওপর দিয়ে দিয়ে, বিলিতি চটকা গাছের ডাল বেয়ে ঝুলে পড়েচে মাকাললতা । কলকাতা থেকে হঠাৎ এসে বেশ লাগচে এই নির্জনতা । চাপবেড়ের পুল ছাড়িয়ে কিছুদূর গিয়েচি, এমন সময় দেখি একটি লোক কাধে বাক নিয়ে আমার আগে আগে যাচে | আমার পায়ের শব্দে সে চমকে পিছন ফিরে আমার দিকে চাইলো । ওকে এপথে একা দেখে একটু আশ্চৰ্য্য হয়েচি। এ বনপথে এ সময় কেউ এক বড় একটা হাটে না । বল্লাম—কোথায় যাবি ? —আজ্ঞে, গোপালনগরে । --বাকে কি রে ? —দই আছে । —এত দুই কি হবে ? —নিবারণ ময়রার বাড়ী বায়ন আছে । তেনাদের বাড়ী আজ খাওয়ান দাওয়ান । --তোদের বাড়ী কোথায় ? দই আনচিস কোথা থেকে ? —আজ্ঞে, বেনাপোল থেকে । —বলিস কিরে, এই দশ মাইল দূর থেকে দই আনচিস! তা এত দেরি করে ফেললি কেন ? লোকটার কণ্ঠস্বরে মনে হয়েছিল ও আমাকে সঙ্গী হিসেবে পেয়ে বঁচিলো এই সন্দেবেলা । একা যেতে ওর নিশ্চয় ভয় করছিল । আমার প্রশ্নের উত্তরে সে গল্প জুড়ে দিলে কেন তার দেরি হল দই নিয়ে রওনা হতে । ওদের একটা গোর হারিয়ে গিয়েছিল আজ পাচদিন। খুজে খুজে হয়রান হয়ে গিয়েছিল। আজ ছুপুরের পর হিজোলতলার বাওড়ে সেই গোরুকে চরতে দেখা গেল। তারপর ওরা দল বেঁধে বেরুলো গোরু আনতে । গিয়ে দেখে বাওড়ের ধারে একটা লোক বলে আছে, তার কাছেই ছ’টা গোরু একসঙ্গে চরচে। সবগুলোই বিভিন্ন গ্রামের হারানো গোরু, ক্রমে জানা গেল। লোকটা ত ওদের দেখেই দৌড়—ইত্যাদি। এইবার বেশ সন্দে হয়ে এসেচে। বঁাশ-আমবনের ভেতরে ভেতরে ঘুলি ঘুলি অন্ধকার। A , সামনে একখানা শুকনো কাঠ উচু চটকা গাছের মাথা থেকে ভেঙে পড়তেই ও চমকে বি. র, ১১—২৮ இ.