পাতা:বিভূতি রচনাবলী (একাদশ খণ্ড).djvu/৫১

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

अटैर्थ छण Oy কলাধরপুরের প্রহ্লাদ সাধুখ, জাতে কলু, তিনপুরুষে ব্যবসাদার। হাতে আগে যত টাকা ছিল, এখন তত নেই, সরষের ব্যবসায়ে ক’বার ধরে লোকসান দিয়ে অনেক কমে গিয়েচে । প্রস্তাদ সাধুর্থার ভাই নরহরি সাধুর্থ তার ডানপাশেই বসেচে। নরহরি এই মঙ্গলগeে ধানপাটের আড়তদারি করে। গোবিন্দ দী পকেট থেকে একটি সিগারেট বার করে বললে—আম্বন ডাক্তারবাৰু ! —ভাল আছেন ? —বেশ আছি। আপনি ? —মন্দ নয় | —এ পাড়াগা ছেড়ে আর কোথাও জায়গা পেলেন না ? কতবার বললাম— —আপনাদের মত বড়লোক তো নই। অন্য জায়গায় গেলে চলতে পারে কি ? কি রকম চলচে আপনাদের ব্যবসা ? —আগের মত নেই, তবুও এক রকম মন্দ নয়। আবদুল হামিদ চৌধুরী বললে—কতক্ষণ এলেন ডাক্তারবাৰু ? —তা জুপুরের পরই এসেচি । এতক্ষণ চলে যেতাম, ভূষণ দা গিয়ে ধরলে গান না শুনে যেতে পারবো না | ভালো সব ? —খোদার ফজলে একরকম চলে যাচ্চে । আমাদের বাড়ীতে একবার চলুন। —আমি ডাক্তার মানুষ, বাড়ীতে নিয়ে গেলেই ভিজিট দিতে হবে, জানেন তো ? —ভিজিট দিতে হয়, ভিজিট দেওয়া যাবে। একদিন গিয়ে একটু দুধ থেয়ে আসবেন। কলাধরপুরের প্রহ্লাদ সাধুর্থ হেসে বললে—সে ভাল তো ডাক্তারবাবু ট্যাকাও পাবেন, আবার দুধও থাবেন। আপনাদের আদেষ্ট ভাল। যান, যান— রামহরি সরকার এতক্ষণ কথা বলবার, ফাক পাচ্ছিল না, সেও একজন যে-সে লোক নয়, মঙ্গলগঞ্জ ইউনিয়নের প্রেসিডেণ্ট । পাড়াগা অঞ্চলে এ সব পদে যারা থাকে, তারা নিজেদের এক একজন কেইবিই বলে ভাবে, উল্লাসিক আভিজাত্যের গর্বে সাধারণ লোক থেকে একটু দূরে রাখে নিজেকে । 輸 রামহরি এই সময় বললে—ডাক্তার আর এই গিয়ে পুলিশ, এদের সঙ্গে ভাব রাখা ও দোষ, না রাখাও দোষ। পরশু আমার বাড়ী হঠাৎ বড় দ্বারোগ এসে তে ওঠলেন। তখুনি পুকুর থেকে বড় মাছ তোলালাম, মাছের ঝোল ভাত হোল । আবদুল হামিদ চৌধুরীর মনে কথাটা লাগলো। সেও তো বড় কম নয়, ইউনিয়ন বোর্ডের মেম্বার, পুলিশ কি শুধু রামহরি সরকারের বাড়ীতেই আসে, তার ওখানেও আসে। স্বতরাং সে বললে—ও তো আমার বাড়ী ছবেলা ঘটচে। সে দিন বড়বাৰু আর মেজবাৰু একসঙ্গে এ্যালেন আশুভাঙা খুনী কেলের এনকোয়ারী সেরে। দুপুর বেলা, ভাত খেয়ে চক্ষু একটু বুজেচি, দুই ঘোড়া এসে হাজির। তখুনি খালি মারা হোল একটা, সরু চালের ভাত আর খালির মাংস হোল ।