পাতা:বিভূতি রচনাবলী (একাদশ খণ্ড).djvu/৭৩

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

चहैथ् घण @的 পেছনে। প্রথমটা আমায় ও দেখতে পেলে না। ওর কৌতুহলী চোখ দুটি যেন নিম্প্রভ হয়ে গেল, সেটা আমার দৃষ্টি এড়ালো না। পান্না গাইতে গাইতে কখনও পিছিয়ে যায়, কখনো এগিয়ে যায়। একটু পরে আমার মনে হল, ও সামনের দিকে মুখ উচু করে চেয়ে চেয়ে দেখচে । গোবিন্দ দা আমাকে ঈষৎ ঠেলা দিয়ে মুদ্ধস্বরে কি বললে, ভালো শুনতে পেলাম না। ও কি সত্যি সত্যি আমাকে খুঁজচে ? আমার কত বয়স হয়েচে, আর ও কতটুকু মেয়ে। আমার বিরহ অনুভব করবে ও মনের মধ্যে! আর একটা নেশা আমায় পেয়ে বসলো । মদের নেশার চেয়েও বেশি। নাচের আসরে বসে আমি দুনিয়া ভুলে গেলাম। কেউ কোথাও নেই । আছে পান্না, অাছি আমি । ঐ স্বন্দরী কিশোরী আমাকে ভালোবাসে ! এ বিশ্বাস করি নি এখনও মনে প্রাণে। তবুও ভাবতে ভালো লাগে, নেশা লাগে । হয়তো এটা আমার দুর্বলতা। আমার বুভুক্ষিত হৃদয়ের আকৃতি। কখনো কেউ আমায় ওভাবে ভালোবাসেনি। স্বরবালা ? সে আছে, এই পৰ্য্যস্ত। কখনো তাকে দেখে আমার এমন নেশা আসে নি মনে । নাচের আসর থেকে উঠে চলে এলাম, গোবিন্দ র্দার প্রতিবাদ সত্ত্বেও। ওরা কি বুঝবে আমার মনের খবর ? ওরা স্কুল জিনিস দেখতে অভ্যস্ত, স্কুল জিনিস নিয়ে কারবার করতে অভ্যস্ত। ওদের ভাষা আমি বুঝি না । ডাক্তারখানায় এসে দেখি, কেউ নেই । কম্পাউণ্ডার গিয়ে বসেছে খেমটার আসরে । চাকরটাও তাই। নিজে আলো জালি, বসে বসে স্টোভ ধরিয়ে একটু চায়ের ব্যবস্থা করি। পুরনো খবরের কাগজ একখানা পড়ে ছিল টেবিলে, তাই দেখি উলটে পালটে। ওই গোবিন্দ দাট আবার এসে টানাটানি না করে । ও কি বুঝবে আমার মনের খবর ? মাঝি কোথা থেকে এসে দাড়িয়ে বললে-বাবু, চা খাচ্চেন, একটু দেবেন মোরে ? —কিসে করে থাবে ? নিয়ে এসে একটা কিছু— —নারকোলের মালা একটা আনবো বাৰু ? —যা হয় করে । 彰 —বাবু, বাড়ী যাবেন না। —না সকালের দিকে খোজ করিস। এখন ঘুমিয়ে নিগে যা— মাঝির সঙ্গে কথা বলে যেন আমি বাস্তব জগতের সংস্পর্শে এলাম । যে জগতে আমি গ্রাম্য-ডাক্তারি করে থাই, সেখানে প্রেমও নেই, চাঁদের আলোও নেই, কোকিলের ডাকও নেই। কড়া চ খেয়ে ভাবি একটু ঘুমুবো, মাঝিও চলে গেল, সম্ভবত ঘুমুতে গেল। এমন সময় নেপাল দোর ঠেলে ঘরে ঢুকলে । বললাম—কি নেপাল, এত রাতে ? –বাৰু, আপনি শোবেন তা ভাবলাম এখানে মশারি নেই—আমার বাড়ী যদি—বে। বলে দিলে—