পাতা:বিভূতি রচনাবলী (চতুর্থ খণ্ড).djvu/১১৪

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

$ ०२ বিভূতি-রচনাবলী দেওয়া হ’ল ! ক্রমে মালতীর বাবার নাম দেশময় ছড়িয়ে পড়ল। গোর্সাইজী বলতে সবাই । গোর্সাইজীকে দেবতা ব’লে জানতো এদেশের লোক। এমন নিল্লোভ, অমন অমারিক লোক কেউ কখনও দেখে নি। শরীরে অহঙ্কার বলে পদার্থ ছিল না। আর অমন মুক্ত মানুষ হয় না—কোন বাধন, কোন নিয়মগণ্ডীর ধার ধারত না। আমাদের বেষ্টিমের সমাজেও অনেক আইন-কামুন আছে, মেনে না চললে সমাজে নিন্দে হয়, বড় বড় মচ্ছবের সময় নেমস্তন্ন পাওয়া যায় না। সে গ্রাহও করতো না, একেবারে আপনভোলা, সদানন্দ, মুক্তপুরুষ ছিল। দ্বারবাসিনী কামারদের গাড়ির কাজ আছে কলকাতায়, একবার তাদের বাড়ি কাঙালীভোজন হচ্ছে, বেশ বড়লোক তারা। কামারদের মেজকর্তা রতনবাবু দাড়িয়ে তদারক করছেন— এমন সময় দেখেন গোসাইজী কাঙালীদের সারিতে পাতা পেতে বসে খাচ্ছেন। পাছে কেউ টের পায় বলে থামের আড়ালে বসেছেন। হৈ হৈ কাও, বাড়িসুদ্ধ এসে হাতজোড় করে দাড়ালো। এ কি কাণ্ড গোর্সাইজী, আমাদের অকল্যাণ হবে যে ! লোকটা এত সরল— কোনো লম্বা চওড়া কথা নয়, কোনো উপদেশ নয়, অবাক হয়ে বললে, তাতে দোষ কি ? আমি শুনলাম কাঙালীভোজন হবে, ভাল-মন্দ খেতে পাওয়া যাবে, তাই এসেছি, এই পথ দিয়ে যাচ্ছিলাম। সে জাত মানতো না, সমাজ মানতো না, আপন-পর বুঝতে না, নিয়ম-কামুনের ধার ধারতো না। কত লোক মন্ত্র নিয়ে আসতো । বলতেী—মন্ত্র কি দেবো ? আপনাকে ভাববে সবাইয়ের চাকর, ব্যস, এই মন্ত্র । মালতীর মা আগেই মারা গিয়েছিল । গোসাইজীর নিজের মরণও হ'ল স্ত্রীর মৃত্যুর তিন বছর পরে। একদিন কোথা থেকে বৃষ্টি মাথায় ভিজে আখড়ায় এলেন । তার পরদিন সকালে আমায় বললেন—উদ্ধব, কাল আমার বড় ঠাণ্ড লেগেছে, একটু যেন জর-মত হয়েছে ; আজ আর ভাত খাব না, কি বলো ? দু-দিন পর জর নিমোনিয়ায় দাড়ালো। বুঝতে পেরেছিলেন বাচবেন না, মেয়েকে মরণের আগের দিন ডেকে বলে গেলেন—মালতী মা, তোর বিয়ে দিয়ে যেতে পারলাম না, তা আমার বলা রইলো যাকে তোর মন চায়, তাকেই বিয়ে করিস। তিনি তো চলে গেলেন, মালতীকে একেবারে নিঃসস্বল অসহায় ফেলে রেখে । হাতে পয়সা রাখতে জানতেন না । ভবিষ্যতের ভাবনা ভাবতেন না—সেটা আমি গুণ বলি নে, দোষই বলি—বিশেষ ক’রে অত বড় মেয়ে—আর ওর কেউ নেই ত্রিসংসারে । বাপ নেই, মা নেই, পয়সা নেই, বাড়ি নেই, ঘরবাড়ি এই আখড়া । মালতীও যে দেখছেন—ও মেয়েও পাগল, ও বাপের ধারায় গিয়েছে। লোকজনকে খাওঁয়াচ্ছে, সেবা করছে—ওই নিয়েই থাকে । কিছু মানে না, ভয় করে না। অন্ত মেয়ে হ’লে এই সব পাড়াগায়ে কত বদনাম রটত—গোসাইজীর মেয়ে বলে সবাই মানে, তাই কেউ কিছু বলে না। দিন পনেরো কেটে গেল । মালতীর বাবার ইতিহাস শুনে বুঝেছি আমি এখানে ছমাস থাকলেও এরা আমায় চলে যেতে বলবে না—বিশেষ ক'রে মালতী তো বলবেই না। কিন্তু আমার পক্ষে থাকাও যেমন অসম্ভব হয়ে উঠছে, চলে যাওয়া তার চেয়েও অসম্ভব যে ! মালতীকে নতুন চোখে দেখতে শিখেছি ওর বাবার পরিচয় শুনে পৰ্যন্ত। মালতীর বাবার মত লোকের সন্ধানে কত ঘুরেছি, এতদিন পরে সন্ধান মিলেছে, কিন্তু চক্ষুষ দেখা হ’ল না । জগতের সকল নিঃস্বার্থ নিৰ্ম্মৎসর BBB BBBB BBBSBBS BB BBBB BBBDD DDBBB BBBBB BBB BBD BBBS দেখুন কিংবা দেখুন কপিলাবস্তু বা প্যালেস্টাইন বা আসিসির ওপরকার ইতালীর ইত্মনীল