পাতা:বিভূতি রচনাবলী (চতুর্থ খণ্ড).djvu/১৫

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

| S || জ্যাঠামশায়দের রান্নাঘরে খেতে বসেছিলাম আমি আর দাদা। ছোট ককম৷ ডাল দিয়ে গেলেন, একটু পরে কি একটা চচ্চড়িও নিয়ে এলেন । শুধু তাই দিয়ে, খেয়ে আগর। দু'জনে ভাত প্রায় শেষ ক'রে এনেছি এমন সময় ছোট কাকীমা আবার এলেন । দাদা হঠাৎ জিজ্ঞেস করলে—কাকীম, আজ মাছ ছিল যে, মাছ কই ? আমি অবাক হয়ে দাদার মুখের দিকে চাইলাম, লজ ও অস্বস্তিতে আমার মুখ রঙ হয়ে উঠল। দাদা যেন কি ! এমন বোকা ছেলে যদি কথনে দেখে থাকি ! আবার অকুমানই ঠিক হ’ল, কাকীমা একটু অপ্রতিভের মুরে বললেন—মছ যা ছিল, আগেহ উঠে গেছে বাবা, ওই দিয়ে থেয়ে নাও । তার একটু ডাল নিয়ে অসবো ? দাদার মুখ দেথে বুঝলাম, দাদা যেন হতাশ হয়েচে । মাছ খাবার আশা করেছিল, তাই না পেয়ে। মনটায় আমার কষ্ট হ'ল। দাদু দেখেও দেখে নু, বুকেও বুঝে ন—দেখছে এখানে আমরা কি অবস্থায় চোরের মত আছি, পরের বাড়ি, তাদের হাত তোলা দু মুঠো ভাতে কটি ভাইবোন কোনরকমে দিন কাটিয়ে যাচ্চি, এথানে আমাদের না আছে জোর, না আছে কোন দাবি—তবুও দাদার চৈতন্ত হয় না, সে আশা ক'রে বসে থাকে যে এই বাড়ির অন্তহ ছেলেদের মত সেও যত্ন পাবে, থাবার সময়ে ভাগের মাছ পাবে, বাটি-ভরা দুধ পাবে, মিষ্টি পাবে। তা পায় ও না, না পেয়ে আবার হতাশ হয়ে পড়ে, আশ|ভঙ্গের দৃষ্টিতে এদিক-ওদিক চায়—এতে আমার ভারি কষ্ট হয়, অথচ দাদাকে ও আসল অবস্থাটা খুলে বলতে পারিনে তাতেও কষ্ট হয় । দাদা বাইরে এসে বললে—মছ তো কম কেন হয়নি, তার ওপর আকার মাঠের পুকুর থেকে মাছ এসেছিল—এত মাছ সব হারু আর ভুটিয়া খেয়ে ফেলেচে ! বাবারে, রক্কোস সব এক-একটি ! একখানা মাছও খেতে পেলাম না । দাদাকে ভগবান এমন বোকা ক’রে গড়েছিলেন কেন তাই ভাবি । সীতা এ সব বিষয়ে অত্যন্ত বুদ্ধিমতী । এই সে-দিনও তো দেখেচি গীত রান্নাঘরে থেতে বসেচে—সামনেই জ্যাঠাইমাও খেতে বসলেন । জ্যাঠাইমাকে ভুবনের মা এক কঁাসি মাছের তরকারি দিয়ে গেল, বড় বড় দাগ মাছ তাট-দশখান। তাতে—তার সীতাকে দিলে তার বরাদ্দমত একটুকরো—জ্যাঠাইমা মাছ যত পারলেন থেলেন, বাকীট বার্সিতেই রেখে দিলেন, সেই পাতে তার ভাগ্নে-বে বসবে। সীতার পাতে তো একখান মাছ ও নিজের পাত থেকে দিতে পারতেন ! কিন্তু কই, তা নিয়ে সীতা তো কখনো কিছু বলে না, দুঃখ করে না, নালিশ করে না! আমি জানতে পারলাম এই জন্তে যে, আমি সে-সময় নিতাইকীকার জন্তে আগুন আনতে রান্নাঘরে গিয়েছিলাম—সীতা কোন কথা আমায় বলেনি। এ বাড়ির ক| গুই এ রকম, আজ এক বছরের ওপর তো দেখে আসচি। অবিশুি নিজের জন্য আমি গ্রাহ ও করিনে, আমার দুঃখ হয় ওদের জন্তে । মায়ের দুঃখও এ বাড়িতে কম নয়। অত থাটুনির অভোস মায়ের ছিল না কোন কালে । এই শীতকালে মাকে গোছা গোছা বাসন নিয়ে ভোরে পুকুরের জলে নমিতে হয়, মা’কে আর সীতাকে। খিড়কি পুকুরের জল সকালে থাকে ঠাও। বরক, রোদ তো পড়ে না জলে কোন