পাতা:বিভূতি রচনাবলী (চতুর্থ খণ্ড).djvu/১৫৫

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

দৃষ্টি-প্রদীপ ත8O বলা আমার আদৌ উচিত হয় নি। 尊 মন অত্যন্ত খারাপ হয়ে গেল—ভাবলাম, এ গ্রামের পাঠশালা তুলে দিয়ে অন্যত্র যাবই। এদিকে হিরন্ময়ীও আর আমার পাঠশালাতে আসে না। মাসের বাকি আটটা দিন পড়িয়ে নিয়ে পাঠশালা তুলে দেব ঠিক ক’রে ফেললাম। সবাইকে বলেও রাখলাম কথাটা। আগে থেকে যাতে সবাই অন্ত ব্যবস্থা ক’রে নিতে পারে। যাবার দু-দিন আগে জিনিসপত্র গোছাচ্ছি—হঠাৎ হিরন্ময়ী নিঃশব্দে ঘরের মধ্যে এসে কখন দাড়িয়েছে। মুখ তুলে ওর দিকে চাইতেই হেসে ফেললে। বললে—আপনি নাকি চলে যাবেন এখান থেকে ? আমি বললাম—যাবই তো । তার পর, এত দিন পরে কি মনে করে ? হিরন্ময়ী তার অভ্যাসমত আমার প্রশ্নের কোন জবাব না দিয়ে বললে—কবে যাবেন ? —বুধবার বিকেলে গাড়ি ঠিক করা আছে, চাকদীতে গিয়ে উঠবে। হিরণারী একবার ঘরের চারিধারে চেয়ে দেখলে । বললে—আপনার সে বড় বাক্সটা কই ? সেটা কামুর বাবার কাছে বিক্ৰী ক’রে ফেলে দিয়েছি। অত বড় বাক্স কি হবে, তা ছাড়া সঙ্গে টেনে টেনে নিয়ে বেড়ানোও মুশকিল । 彎 হঠাৎ হিরন্ময়ী বপ, ক’রে মেজেতে বসে পড়ল—কর্তৃত্ব ও আত্মপ্রত্যয়ের মুরে বললে—ন, আপনি যেতে পারবেন না । দেখি দিকি কেমন যান ? আমার হাসি পেল ওর রকম দেখে। খুব আনন্দও হ’ল—একটা অদ্ভুত ধরনের আনন্দ হ’ল। বললাম—তোমার তাতে কি, আমি যাই আর না-যাই ? তুমি তো আর এতদিন উকি মেরেও দেখতে আস নি হিরণ, তুমি আমার পাঠশালা পর্যন্ত যাওয়া ছেড়েছ। —ইস্ ! তাই বই কি ? —তুমি ভেবে দেখ তাই কি না। উড়িয়ে দিলে চলবে না হিরণ, আমি যাবই ঠিক করেছি, তুমি আমায় আটকাতে পারবে না। কারুর জন্তে কারুর আটকায় না—এ তুমি নিজেই আমায় একদিন বলেছিলে । + হিরন্ময়ী বালিকাসুলভ হাসিতে ঘর ভরিয়ে ফেলে বললে—ওই ! কথা যদি একবার শুরু ক’রে দিলেন তো কি আর আপনার মুখের বিরাম আছে ? কারুর জন্তে কারুর আটকার না, হেন না তেন নী—মাগো–কথার ঝুড়ি একেবারে । —সে যাই হোক, আমি যাবই। —ককৃখনো না। ইং, বললেই হ’ল যাব ! আমি চুপ করে রইলাম—ছেলেমানুষের সঙ্গে তর্ক করে লাভ কি ? দেখি যে বিকেলে পাঠশালায় হিরন্ময়ী বইখাতা নিয়ে হাজির হয়েছে। সে এসে সব ছেলেমেয়েকে বলে দিলে আমার পাঠশালা উঠবে না, আমি কোথাও যাব না, সবাই যেন ঠিকমত আসে। এমন সুরে বললে যে সে যেন আমার দওমুণ্ডের মালিক। বললে—এই হাঙ্ক, মাস্টার মশার তোমার বলেছিলেন না ধারাপাত আনতে—কেন আন নি ধারাপাত ? এই সোমবারের হাট থেকে আনতে বলে দেবে। বুঝলে ? ইাছ বোকার মত দৃষ্টিতে ওর দিকে চেয়ে বললে—মাস্টার মশাই যে সোমবারে চলে যাবেন এখান থেকে । হিরন্ময়ী তাকে এক তাড়া দিয়ে বললে—কে বলেছে চলে যাবেন । মেরে হাড় ভেঙে দেব ছোড়ার! বা বা বলছি তা শোন। বাদর কোথাকার— મ જ