পাতা:বিভূতি রচনাবলী (চতুর্থ খণ্ড).djvu/১৭৫

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

किम्लङ्ग झल SVS) হয়, মুজিবরের দোকানে গিয়া বসি । নীচু চালাঘরের দোকান, রেড়ির তেল,কেরোসিন তেল, জিরেমরিচ, খড়িমাটি, কড়া তামাক, আলকাতরা, পচা সর্ষের তেল, সবে মিলিয়া কেমন একটা গন্ধ ঘরটায় । গন্ধটায় মন হু হু করে, মনে হয় এ কোথায় পাড়াগায়ে পড়িয়া আছি ! কবে বেড়াজালের নাগপাশ হইতে মুক্তি পাইব ? আদৌ মুক্তি পাইব কি না তাই বা কে জানে ? জীবনটা যেন কেমনধারা হইয়া গেল। তবুও যদি—এত কষ্টেও এই একঘেয়ে অজ পাড়াগয়েও, আমার মনে হয়, সব কষ্টসহ করিতে পারিতাম, যদি মুবাসিনী ও খোকা কাছে থাকিত। একবার যখন কলিকাতায় থাকিতাম, ভবানীপুর দিয়া আসিতেছি, দেখি একটা বড় বাড়ি হইতে দলে দলে মেয়ের বই হাতে করিয়া বাহির হইতেছে । নানা বয়সের মেয়ে আছে তার মধ্যে । - ভাবিলাম—এ কি ? এত মেয়ে আসে কোথা হইতে ? ব্যাপার কি একবার দেখিতে হইতেছে তো । তারপর জানিলাম—সেটা একটা মেয়েদের কলেজ । কি চমৎকার সব মেয়ে ছিল তার মধ্যে। কেমন সব পরনে, কেমন চশমা, কি রূপ ! আরি একবার দেবেন্দ্র ঘোষ ষ্ট্রীট দিয়ে যাইতেছিলাম, একটি বড়লোকের বাড়ির দোতলায় কোন এক মেয়ে গান গাহিতেছিল, দাড়াইয়া দাড়াইয়া শুনিলাম। অমন সুন্দর গান তারপর আর কখনো শুনি নাই। কোথায়ই বা শুনিব ? গানের কয়েকটি লাইন এখনও মনে আছে। প্রিয় তুমি আস নাই আজ ভোরে মধুমালতীর নয়নে শিশির দোলে। সে সব গান আমাদের মত মাটির মানুষের জন্তে নয় । সারাদিন ঝম্ ঝম্ বৃষ্টির পরে সন্ধ্যার সময়টা একটু বাদল থামিয়াছে। গাছপালার অন্ধকারের সঙ্গে আকাশের অন্ধকার মিলিয়া হাটতলা যেমন নির্জন, তেমনি অন্ধকার । ডোবার জলে মনের আনন্দে ব্যাঙ ডাকিতেছে, প্রমে যেখানে ঘেটকোলের ডগা তুলিয়া বেড়াইত, সেই সব বনে বিবি পোকার দল একঘেয়ে ডাক জুড়িয়া দিয়াছে। জাম গাছের উচু ডালট হইতে দমকা হাওয়ায় ছড়, ছড়, করিয়া পাকা জাম বনের মধ্যে অন্ধকালে জলেভেজ শেওড়াবনের মাথায় পড়িতেছে । নির্জন সন্ধ্যায় এক বসিয়া ভাবি••• পুরোনো কথা বাল্যে সৰ্ব্বদাই দেখতুম, বাবার সঙ্গে ঠাকুরমার ঝগড়াবিবাদ চলেছে। এর কারণ কিছু বুঝতুম না, আমার বয়স তখন সাত বছর। ঠাকুরম যে বাবার মা এটা অনেকদিনই বুঝেছিলুম, কিন্তু মা ছেলেকে অমনি ক’রে যে দিন নেই রাত নেই বকে, তার কোনো নজীর আমার নিজের মায়ের সঙ্গে আমার সম্বন্ধে খুজে পাই নি। বুড়ে মানুষেই যে অমনি করে, তাও তো নয় ; কারণ আমার দিদিমা ছিলেন ঠাকুরমার চেয়েও বেশী বয়সের। দিদিমার মাথার চুল পেকেছিল, ঠাকুরমার মাথার চুল তখনও অনেক কাচা । কিন্তু কই দিদিমা তো আমার খুব ভালবাসতেন, কাউকে তে কখনও বকতে শুনি নি তার মুখে। তবে কেন ঠাকুরমা এরকম করেন আমার বাবাকে ? মাঝে মাঝে একথা