পাতা:বিভূতি রচনাবলী (চতুর্থ খণ্ড).djvu/১৯৭

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

किम्लन्न झल . ›bሥ¢ আমি বিনীত প্রতিবাদের স্বরে বলতে গেলুম—রাগ নয় বাবাজী, বৈরাগ্য— সাধুজী হেসে বললেন, যে কথাটি পাগলীও বলেছিল— —ওহে ছোকরা, সাধু হব বললেই হওয়া যার না। তোর মধ্যে ভোগের বাসনা এখনও পুরো মাত্রায় রয়েছে। সংসারধৰ্ম্ম করগে যা। মন্দির থেকে কিছু দূরে ছাতিম গাছের তলায় সাধুর পঞ্চমুণ্ডির আসন-পাচটি নরমুণ্ড পেতে তৈরী। সাধু রাত্রে সেখানে নির্জনে সাধনা করেন তাও দেখলুম। মনে ভারী শ্রদ্ধা হ’ল, সংকল্প করলুম এ মহাপুরুষকে ছেড়ে কোথাও যাচ্ছিনে এবার । কিছুদিন লেগে রইলাম তার পিছনে। র্তার হোমের কাঠ ভেঙে এনে দিই, তিন মাইল দূরের কুমুমবনী বলে গ্রাম থেকে তার চাল-ডাল কিনে আনি । গ্রামের সকল লোকের মুখে শুনলুম সাধুটি বড় একজন তান্ত্রিক । অনেক অদ্ভুত ক্রিয়াকলাপ তার আছে। তবে পাগলীর কাছে যেতে লোকে যেমন আমায় ভয় দেখিয়েছিল—এখানেও তেমনি ভয় দেখালে । বললে— তান্ত্রিক সাধুসমিসিদের বিশ্বাস করো না বেশী। ওরা সব পারে, একটু সাবধান হয়ে চলো। বিপদে পড়ে যাবে। শীঘ্রই ওদের কথার সত্যত একদিন বুঝলুম। 叠 . গভীর রাত্রিতে আমার ঘুম ভেঙে গিয়েছে। সেদিন শুক্লপক্ষের রাত্রি, বেশ ফুটফুটে জ্যোৎস্না। মন্দির থেকে ছাতিম গাছের দিকে চেয়ে দেখি সাধু বাবাজী কার সঙ্গে পঞ্চমুণ্ডির আসনে বসে কথা বলছেন। কৌতুহল হ’ল—এত রাত্রে কে এল এই নির্জন নদীতীরের জঙ্গলের মধ্যে ? কৌতুহল সামলাতে না পেরে এগিয়ে গেলুম। অল্প দূরে গিয়েই যা দেখলুম তাতে আর এগিয়ে যেতে সঙ্কোচ বোধ হ'ল এবং সঙ্গে সঙ্গে রীতিমত আশ্চৰ্য্য হয়ে গেলুম। সাধু বাবাজী এত রাত্রে একজন মেয়েমানুষের সঙ্গে কথা বলছেন—গাছের আড়াল থেকে মেয়েমানুষটিকে আমি খানিকটা স্পষ্ট খানিকটা অস্পষ্টভাবে দেখে আমার মনে হ’ল মেয়েটি যুবতী এবং পরম সুন্দরী। এত রাতে গুরুদেব কোন মেয়ের সঙ্গে কথা বলছেন, সে মেয়েটি এলই বা কেমন ক’রে একা এই নির্জন জায়গায় ? যাই হোক আর বেশীদূর অগ্রসর হলেই ওরা আমার টের পাবে । মনে কেমন ভয়ও হ’ল, সেদিন চলে এলুম। তার পরদিন রাত্রে আমি ঘুমুলাম না । গভীর রাত্রে উঠে পা টিপে টিপে বাইরে গিয়ে গাছের আড়াল থেকে উকি মেরে দেখি কাল রাতের সে-মানুষটি আজও এসেছে। ভোর হবার কিছু আগে পর্য্যন্ত আমি সেদিন গাছের আড়ালে রইলাম দাড়িয়ে । ফরসা হবার লক্ষণ হচ্ছে দেখে আর সাহস হ’ল না—মন্দিরে গিয়ে নিজের বিছানার শুয়ে ঘুমিয়ে পড়লাম। পরদিন রাত্রেও আবার অবিকল তাই । একদিন আর একটি জিনিস লক্ষ্য করলাম। - যে-মেয়েমানুষটির সঙ্গে কথা হচ্ছে তার পরণের বস্থাদি বড় অদ্ভুত ধরণের। সে যে কোন দেশের বস্ত্র পরেছে, সেটা না শাড়ি, না ঘাঘরা, না জাপানী কিমোনে, না মেয়েদের গাউন —অজানা যদিও, ভারী চমৎকার মানিয়েছেও বটে । সেদিন আরও একটা কথা আমার মনে হ’ল । মেয়েমানুষটি যেই হোক, সে জানে আমি রোজ গাছের আড়ালে দাড়িয়ে দাড়িয়ে ওর দিকে চেয়ে থাকি। কি ক’রে আমার একথা মনে হ’ল তা আমি বলতে পারব না, কিন্তু এই কথা