পাতা:বিভূতি রচনাবলী (চতুর্থ খণ্ড).djvu/২২১

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

কিন্নর দল శిరి సి খুকীর ঠাকুরমা আসিয়া বলিলেন—বুধী এলো কোখেকে ! আহ, কি হাড়সার হয়ে গিয়েছে, ওকে যে আর চেনা যায় না ! খুকীর মা বলিলেন—ও কি করে পালিয়ে এলো আজ দু'মাস পরে। ঠিক দু’মাস হয়েচে । আমি তখন বলেছিলুম চালানে পালে গরু বেচে না ওরা—শুনিচি নাকি কলকাতায় কসাইখানায় নিয়ে গিয়ে বিক্ৰী করে। সত্যি মিথ্যে জানিনে বাপু । এই রকম কিন্তু সবাই বলে। তোমরা তখন শুনলে না—ভাবলে বুড়ো গরু দুধ তো আর দেবে না—বেচে ফেলে আপদ মিটিয়ে দিই। সংসারের মঙ্গল হোত ভাবচো ওই গরু যদি বেঘোরে মারা যেতো ? ও কি করে পালিয়ে এলো তাই ভাবি ! বোধ হয় রাস্তা থেকে পালিয়েছে পাল থেকে, কি হাড়সার হয়ে গিয়েচে, মা গো মা ! সন্ধ্যা উত্তীর্ণ হইয়া গিয়াছে। বুধী গোহালে শুইয়া পড়িয়াছে। এই তাহার আপনার গৃহ —এখনও তাহার বিশ্বাস হইতেছে না বে সত্যই বাড়ি ফিরিয়াছে। এই তাহার আবাল্য পরিচিত গোহাল, এই সেই বিচালির গাদা, সেই রকম ঘন সাজালের ধোয়ায় গোহাল অন্ধকার— একটাও মশা নাই, বড় বাছুরটা একপাশে সানি খাইতেছে। খুকীদের রান্নাঘরে খুকীর মা রাধিতেছেন, খুকীর উচ্চকণ্ঠ শোনা যাইতেছে। কাল সকালে নদীর ধারে তার প্রিয়, পরিচিত মাঠটিতে সে ঘাস খাইতে যাইবে । আর একটা সাথী বন্ধু জুটিয়া যাওয়াও বিচিত্র নয়। বিধু মাস্টার বিধু মাস্টারের কথা আমি কখনও ভুলতে পারব না। তার স্মৃতি হয়তো আজীবন আমার বহন করে বেড়াতে হবে । মাত্র ক'টা মাস তিনি আমার কাছে এসেছিলেন, তারপর চলে গেলেন —শুধু এই ক্ষণিকের পরিচয় আজ অমর হয়ে রয়েছে। বেশ মনে আছে, সে দিনটা ছিল রবিবার। আমি সকালবেলা কৌমুদী খুলে ধাতুরূপ মুখস্থ করছি চোখ বন্ধ করে দুলে দ্বলে, এমন সময় বাইরে কে যেন ডাকলেন, হারাণবাবু আছেন ? হারাণবাবু! আমি জানলা দিয়ে মুখ বার করে প্রশ্ন করলুম, কাকে চাই ? —এখানে হারাণবাবু বলে কি কেউ থাকেন ? —থাকেন। তিনি আমার কাকা । —র্তাকে একবার ডেকে দাও তো । —কি দরকার ? —র্তার কি একজন টিউটর চাই ? সত্যিই তো মেজকাকা আমাদের জন্য একজন টিউটর চাই বলে খবরের কাগজে একটা বিজ্ঞাপন দিয়েছিলেন । কথাটা আমি একেবারে ভুলেই গেছলুম। বললুম, আপনি বুঝি সেই বিজ্ঞাপন দেখেই আসছেন ? -ईशीं । —ত ভেতরে এসে বম্বন। আমি মেজকাকাকে ডেকে দিচ্ছি। ছিপছিপে, লম্ব, কালোপান লোকটা অত্যন্ত দ্বিধায়, অতি সন্তপণে আমাদের বৈঠকখানার প্রবেশ করলেন। আমি বললুম, বসুন আপনি । वि. ब्र. 8-38