পাতা:বিভূতি রচনাবলী (চতুর্থ খণ্ড).djvu/২৩৪

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

२२९ ।। विङ्कडि-ब्रध्नावली আপনাদের বেীকে হাতে ধরে ঘরে না তুললে কে আর তুলবে? আমুন সবাই। বাধ্য হয়ে কাছাকাছির দু-তিন বাড়ির মেয়েরা শাক হাতে, জলের ঘটি হাতে নতুন বেীকে ঘরে তুলতে এলেন—খানিকটা চক্ষুলজ্জায়, খানিকটা কৌতুহলে। মজা দেখবার প্রবৃত্তি সকলের মধ্যেই আছে। ছোটবড় ছেলেমেয়েও এল অনেকে, শাস্তি এল, কমলা এল, সারদা এল । শ্ৰীপতিদের বাড়ির উঠোনে লিচুতলায় একটি মেয়ে দাড়িয়ে রয়েছে, দূর থেকে মেয়েটির ধপধপে ফর্স গায়ের রং ও পরনের দামী সিদ্ধের শাড়ি দেখে সকলে অবাক হয়ে গেল । সামনে এসে আরও বিস্মিত হবার কারণ ওদের ঘটলে—মেয়েটির অনিন্যসুন্দর মুখশ্ৰী দেখে। কি ডাগর ডাগর চোখ ! কি সুকুমার লাবণ্য সারা অঙ্গে ! সৰ্ব্বোপরি মুখশ্ৰী—অমন ধরনের মুন্দর মুখ এসব পাড়াগায়ে কেউ কখনো দেখেনি। সকলে আশা করেছিল গিয়ে দেখবে কালোকোলো একটা মোট-মত মাগী আধ-ঘোমটা দিয়ে উঠোনের মাঝখানে দাড়িয়ে প্যাটু প্যাটু করে চেয়ে রয়েছে ওদের দিকে। কিন্তু তার পরিবর্তে দেখলে, এক নম্ৰমুখী সুন্দরী তরুণী মূৰ্ত্তি”। মুখখানি এত মুকুমার যে মনে হয় ষোলসতেরো বছরের বালিকা । বিকেলে ওপাড়ার নিতাই মুখুয্যের বেী ঘাটের পথে চকত্তি-গিয়ীকে জিজ্ঞেস করলেন–কি দিদি, শ্ৰীপতির বেী দেখলে নাকি ? কেমন দেখতে ? চক্কত্তি-গিল্পী বল্লেন—না, দেখতে বেশ ভালই— চক্কত্তি-গিল্পীর সঙ্গে শান্তি ছিল, সে হাজার হোক ছেলেমানুষ, ভাল লাগলে পরের প্রশংসার বেলায় সে এখনও কার্পণ্য করতে শেখেনি, সে উচ্ছ্বসিত মুরে বলে উঠলোঁ—চমৎকার, খুড়ীমা একবার গিয়ে দেখে আসবেন, সত্যিই অদ্ভুত ধরনের ভাল। নিতাই মুখুয্যের বে। পরের এতখানি প্রশংসা শুনতে অভ্যস্ত ছিলেন না—বুঝতে পারলেন না শাস্তি কথাটা ব্যঙ্গের সুরে বলছে, না সত্যিই বলছে । বললেন—কি রকম ভাল ? এবার চক্কত্তি-গিন্নী নিজেই বল্লেন—ন, বে) যা ভেবেছিলাম তা নয়। বৌটি সত্যিই দেখতে ভাল । আর কেনই বা হবে না বলে, শহরের মেয়ে, দিনরাত সাবান ঘষছে, পাউডার ঘষছে, তোমার-আমার মত রাধতে হ’ত, বাসন মাজতে হ’ত তো দেখতাম চেহারার কত জলুল বজায় রাখে। এই বয়সে তো দূরের কথা, তার বিগত যৌবন দিনেও অজস্র পাউডার সাবান ঘষলেও যে কখনো তিনি শ্ৰীপতির বৌয়ের পায়ের নখের কাছে দাড়াতে পারতেন না—চক্কত্তি-গিল্পীর সম্বন্ধে শাস্তির একথা মনে হ’ল। কিন্তু চুপ করে রইল সে। বিকেলে এ-পাড়ার ও-পাড়ার মেয়ের দলে দলে বোঁ দেখতে এল। অনেকেই বলে, এমন রূপসী মেরে তারা কখনো দেখেনি। কেবল হরিচরণ রায়ের স্ত্রী বল্লেন—আর বছর তারকেশ্বরে যাবার সময় ব্যাণ্ডেল স্টেশনে তিনি একটি বোঁ দেখেছিলেন, সেটি এর চেয়েও রূপসী । মেয়ে-মজলিসে পরদিন আলোচনার একমাত্র বিষয় দাড়ালে৷ শ্ৰীপতির বে। দেখা গেল তার রূপ সম্বন্ধে দু-মত নেই সভ্যাদের মধ্যে, কিন্তু তার চরিত্র সম্বন্ধে নানারকম মন্তব্য অবাধে চলেছে । —ধরন-ধারণ যেন কেমন-কেমন—অত সাজগোজ কেন রে বাপু ? —ভাল ঘরের মেয়ে নয় । দেখলেই বোঝা যায়— —বাসন মাজতে হ’লে ও-হাত আর বেশীদিন অত সাদাও থাকবে না, নরমও থাকবে না —ঠালা বুঝবেন পাড়াগায়ের। গলায় নেকলেস কুলুতে আমরাও জানি—