পাতা:বিভূতি রচনাবলী (চতুর্থ খণ্ড).djvu/২৩৬

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

૨૨8 বিভূতি-রচনাবলী গায়ে-ঘরে কে কি হয়তো মনে করবে । ே বল্লে—নিজের বাড়ি বলে বাজাবে, কে কি মনে করবে ? একটু বাজিয়ে শোনাও না বৌদি ] একটু পরে রায়-গিল্পী ঘাটে যাবার পথে শুনতে পেলেন শ্ৰীপতির বাড়ির মধ্যে কে বেহালা না কি বাজাচ্ছে, চমৎকার মিষ্টি ! কোনো ভিখিরী গান গাচ্ছে বুঝি ? দাড়িয়ে দাড়িয়ে থানিকক্ষণ শুনে তিনি ঘাটে চলে গেলেন। ঘাটে গিয়ে তিনি মজুমদার-বোঁকে বল্লেন কথাটা। —ওই শ্ৰীপতির বাড়ি কে একজন বোষ্টম এসে বেহালা বাজাচ্ছে শুনে এলাম। কি চমৎকার বাজাচ্ছে দিদি, দুদণ্ড দাড়িয়ে শুনতে ইচ্ছে করে। দুপুরের মেয়ে-মজলিসে শান্তির মা বল্পেন—শ্ৰীপতির বে চমৎকার বাজাতে পারে এসরাজ না কি বলে, একরকম বেহালার মত। শাস্তিদের ওবেলা শুনিয়েছিল— রায়-বেী বল্লেন—ও ! তাই ওবেলা নাইতে যাবার সময় শুনলাম বটে । সে যে ভারী চমৎকার বাজনা গে, আমি বলি বুঝি কোন ফকির বোষ্টম ভিক্ষে করতে এসে বাজাচ্ছে! এমন সময় শাস্তি আসতেই তার মা বল্লেন—ওই জিজ্ঞেস কর না শাস্তিকে । শাস্তি বল্লে—উঃ, সে আর তোমায় কি বলব খুড়ীমা, বৌদিদি যা বাজালে অমন কখনো শুনিনি—শুনবে তোমরা ? তাহলে এখন বলি বাজাতে—বল্লেই বাজাবে। শান্তি শ্ৰীপতিদের বাড়ি চলে যাবার অল্প পরেই শোনা গেল শ্ৰীপতির বৌয়ের এসরাজ বাজনা । অনেকক্ষণ কারো মুখে কথা রইল না। চক্কত্তি-গিল্পী বল্লেন, বড় চমৎকার বাজায় তো ! সকলেই স্বীকার করলে শ্ৰীপতির বৌকে আগে যা ভাবা গিয়েছিল, সে-রকম নয়, বেশ মেয়েটি। 嘯 এসরাজ বাজনার মধ্যে দিয়ে পাড়ার সকলের সঙ্গে শ্ৰীপতির বৌয়ের সহজ ভাবে আলাপ পরিচয় জমে উঠলো। দুপুরে, সন্ধ্যায় প্রায় সবাই যায় শ্ৰীপতিদের বাড়ি বাজনা শুনতে। তারপর গান শুনলো সবাই একদিন । পূর্ণিমায় রাত্রে জ্যোৎস্নাভর ভেতর-বাড়ির রোয়াকে বসে বেী এসরাজ বাজাচ্ছিল, পাড়ার সব মেয়েই এসে জুটেচে । শ্ৰীপতি বাড়ি নেই। কমলা বল্লে—আজ বৌদি একটা গান গাইতেই হবে—তুমি গাইতেও জানো ঠিক— শোনাও আজকে— বৌটি হেসে বল্লে—কে বলেচে ঠাকুরঝি যে আমি গান গাইতে জানি ? —ম, ওসব রাথো—গাও একটা— সকলেই অনুরোধ করলে। বল্লে–গাও বেীমা, এ পাড়ায় মামুষ নেই, আস্তে আস্তে গাও, কেউ শুনবে না— শ্ৰীপতির বেী একখানা মীরার ভজন গাইলে । রাণাজী, ম্যর গিরধর কে ঘর যান্থ গিরধর মূহার সাচে প্রিতম্ দেখত রূপ লুভীউ। গায়িকার চোখে মুখে কি ভক্তিপূর্ণ তন্ময়তার শোভা ফুটে উঠলো গানখানা গাইতে গাইতে —শান্তি একটা গন্ধরাজ আর টগরের মালা গেথে এনেছিল বৌদিকেই পরাবে বলে—গান গাইবার সময়ে সে আবার সেটা বৌয়ের গলায় আলগোছে পরিয়ে দিলে—সেই জ্যোৎস্নায় সাদা সুগন্ধি ফুলের মালা গলায় রূপলী বৌয়ের মুখে ভূজন শুনতে শুনতে মন্টর মার মনে হলো এই