পাতা:বিভূতি রচনাবলী (চতুর্থ খণ্ড).djvu/২৩৭

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

किम्लङ्ग झल ২২৫ মেয়েটিই সেই মীরাবাই, অনেককাল পরে পৃথিবীতে আবার নেমে এসেছে, আবার সবাইকে ভক্তির গান গাইয়ে শোনাচ্ছে । মন্টর মা একটু একটু বাইরের খবর রাখতেন, যাত্রায় একবার মীরাবাই পালা দেখেছিলেন তার বাপের বাড়ির দেশে । তারপর আর একখানা হিন্দীগান গাইলে বে। এরা অবিহি কিছু বুঝলেন না। তবে তন্ময় হয়ে শুনলেন বটে । * তারপর একখানা বেহাগ। বাংলা গান এবার । সকলে শুয়ে পড়লো, শান্তির চোখ দিয়ে জল পড়তে লাগলো। অনেকে দেখলে বৌয়েরও চোখ দিয়ে জল পড়ছে গান গাইতে গাইতে —রুপসী গায়িকা একেবারে যেন বাহ্যজ্ঞান ভুলে গিয়েছে গানে তন্ময় হয়ে । সেদিন থেকেই সকলে শ্ৰীপতির বোঁকে অন্ত চোখে দেখতে লাগলো। ওর সম্বন্ধে ক্রমে উচ্চ ধারণা করতে সকলে বাধ্য হ’ল আরও নানা ঘটনায়। পাড়াগায়ে সকলেই বেশ হুশিয়ার, একথা আগেই বলেছি। ধার দিয়ে—সে যদি এক খুচি চাল কি দু পলা তেলও হয়—তার জন্তে দশবার তাগাদ করতে এদের বাধে না । কিন্তু দেখা গেল শ্ৰীপতির বেী সম্পূর্ণ দিলদরিয়া মেজাজের মেয়ে । দেবার বেলায় সে কখনও না বলে কাউকে ফেরায় না, যদি জিনিসটা তার কাছে থাকে। একেবারে মুক্তহস্ত সে বিষয়ে–কিন্তু আদায় করতে জানে না, তাগাদ করতে জানে না, মুখে তার রাগ নেই, বিরক্তি নেই, হাসিমুখ ছাড়া তার কেউ কখনো দেখেনি । শ্ৰীপতির বৌয়ের আপন-পর জ্ঞান নেই, এটাও সবাই দেখলে। পাশের বাড়িতে চক্কত্তিগিন্নী বিধব, একাদশীর দিন দুপুরে তিনি নিজের ঘরে মাদুর পেতে শুয়ে আছেন, শ্ৰীপতির বে। একবাটি তেল নিয়ে এসে র্তার পায়ে মালিশ করতে বসে গেল । যেন ও তার নিজের ছেলের বে। চকত্তি-গিনী একটু অবাক হলেন প্রথমটা। পাড়াগায়ে এরকম কেউ করে না, নিজের ছেলের বৌয়েই করে না তো অপরের বেী ! —এসো, এসো, মা আমার এসো। থাক্ থাক, তেল মালিশ আবার কেন মা ? তোমায় ওসব করতে হবে না, পাগলী মেয়ে— এই পাগলী মেয়েটি কিন্তু শুনলে না । সে জোর করেই বসে গেল তেল মালিশ করতে । মাথায় চুল এসে অগোছালো ভাবে উড়ে পড়েছে মুখে, মুগৌর মুখে অতিরিক্ত গরমে ও শ্রমে কিছু কিছু ঘাম দেখা দিয়েছে—চকত্তি-গিল্পী এই সুন্দরী বৌটির মুখ থেকে চোখ যেন অন্যদিকে ফেরাতে পারলেন না। বড় স্নেহ হ’ল এই আপন-পর জ্ঞান-হারা মেয়েটার ওপর । ইতিমধ্যে কমলার বিয়ে হয়ে গেল। শ্বশুরবাড়ি যাবার সময়ে সে শ্ৰীপতির বৌয়ের গলা জড়িয়ে ধরে কেঁদে বল্লে—বৌদিদি, তোমায় কি করে ছেড়ে থাকবো ভাই ? মাকে ছেড়ে যেতে যত কষ্ট না হচ্ছে, তত হচ্ছে তোমায় ছেড়ে যেতে ! এই এক ব্যাপার থেকেই বোঝা যাবে শ্ৰীপতির বৌ এই অল্প কয়েক মাসের মধ্যে গ্রামের তরুণ মনের ওপর কি রকম প্রভাব বিস্তার করেছিল । পূজার সময় এসে পড়েচে । আশ্বিনের প্রথম, শরতের নীল আকাশে অনেকদিন পরে সোনালী রোদের মেলা, বনসিমের ফুল ফুটেছে ঝোপে ঝোপে, নদীর চরে কাশ ফুলের শোভা । পাশের গ্রাম সত্রাজিৎপুরে বাড়য্যে-বাড়ি পূজো হয় প্রতি বৎসর, এবারও শোনা যাচ্ছে মহানবমীর দিন তাদের বাড়ি আর বছরের মত যাত্রা হবে কাচড়াপাড়ার দলের । देि. झ. 8-se * *