পাতা:বিভূতি রচনাবলী (চতুর্থ খণ্ড).djvu/২৩৯

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

कि#ब्र मन्न २२१ নীল পোশাকে স্বগৌর দেহে যখন সে নদীর ঘাটে স্নান করে উঠে দাড়ায়—তখন ঘাটমৃদ্ধ মেয়ের —বোস গিল্পী, মন্টর মা, শাস্তির মা, মজুমদার-গিয়ী ওর দিকে ই করে চেয়ে থাকেন। রূপ আছে বটে ছেলেটির! শান্তি দস্তুরমত গৰ্ব্ব অনুভব করে, যখন পিণ্ট, অকুযোগ করে বলে— আঃ শাস্তিদি, আমুন না উঠে, ভিজে কাপড়ে কতক্ষণ দাড়িয়ে থাকবে ? অামুন বাড়ি যাই । পূজো এসে পড়লো। এ গায়ে কোনো উৎসব নেই পূজোয়, গরীবদের গায়ে পূজো কে করবে ? দূর থেকে সত্ৰাজিৎপুরের বাজুযো-বাড়ির ঢাক শুনেই গায়ের মেয়ের সন্তুষ্ট হয়। ভিন গায়ে গিয়ে মেয়েদের পূজো দেখবার রীতি না থাকায় অনেকে দশ-পনেরো কি বিশ বছর দুর্গ প্রতিমা পৰ্য্যন্ত দেখেনি। মেয়েদের জীবনে কোনো উৎসব আমোদ নেই এ গায়ে । শ্ৰীপতির বে। তাই একদিন শান্তিকে বলেছিল—সত্যি কি করে যে তোরা থাকিস্ ঠাকুরঝি —একটু গান নেই, বাজন নেই, বই পড়া নেই, মানুষ যে কেমন করে থাকে এমন করে । বোধ হয় সেই জন্তেই এত উৎসাহের সঙ্গে ও লেগেছিল থিয়েটারের ব্যাপারে । শ্ৰীপতিদের বাড়ির লম্বা বারান্দার একধারে তক্তাপোশ পেতে দড়ি টাঙিয়ে হলদে শাড়ি ঝুলিয়ে স্টেজ করা হয়েছে। শ্ৰীপতির বৌ ভাই-বোনদের নিয়ে সকাল থেকে খাটচে। শান্তি বল্লে—তুমি এতে জানলে কি করে বৌদি ? রম বল্লে—তুমি জানো না দিদিকে শান্তিদিদি। দিদি অল বেঙ্গল মিউজিক কম্পিটিশনে— শ্ৰীপতির বেী ধমক দিয়ে বোনকে থামিয়ে দিয়ে বল্লে—নে, নে—যা, অনেক কাজ বাকী, এখন তোর অত বক্তৃতা করতে হবে না দাড়িয়ে— রমা না থেমে বল্লে—আর খুব ভাল পার্ট করার জন্তেও সোনার মেডেল পেয়েছে—যতবার পয়ল বোশেথের দিন আমাদের বাড়িতে থিয়েটার হয়, দিদিই তো তার পাগুHজানো আমাদের কি নাম দিয়েছেন জ্যাঠামশায়— শ্ৰীপতির বেী বল্লে –আবার ? রমণ হেসে থেমে গেল । মহাষ্টমীর দিন আজ। শুধু মেয়েদের আর ছোট ছোট ছেলেদের নিয়ে থিয়েটার। দেখবে শুধু মেয়েরাই—সমস্ত পাড়া কুড়িয়ে সব মেয়ে এসে জুটেছে থিয়েটার দেখতে। ছোট নাটকটি। শ্রীপতির বৌয়ের জ্যাঠামশায়ের নাকি লেখা। রাজকুমারকে ভালবেসেছিল তারই প্রাসাদের একজন পরিচারিকার মেয়ে । ছেলেবেলায় দু'জনে খেলা করেছে। বড় হয়ে দিগ্বিজয়ে বেরুলেন রাজপুত্র, অন্য দেশের রাজকুমারী ভদ্রাকে বিবাহ করে ফিরলেন। পরিচারিকার মেয়ে অনুরাধা তখন নব-যৌবনা কিশোরী, বিকশিত মল্লিকা-পুষ্পের মত শুভ্ৰ, পবিত্র। খুব ভাল নাচতে গাইতে শিখেছিল সে ইতিমধ্যে। রাজধানীর সবাই তাকে চেনে জানে— নৃত্যের অমন রূপ কেউ দিতে পারে না। এদিকে ভদ্রাকে রাজ্যে এনে রাজকুমার এক উৎসব করলেন। সে সভায় অনুরাধাকে নাচতে গাইতে হ’ল রাজপুত্রের সামনে ভাড়া করা নর্তকী হিসাবে। তার বুক ফেটে যাচ্চে, অথচ সে একটা কথাও বল্লে না, নৃত্যের মধ্যে দিয়ে, সঙ্গীতের মধ্যে দিয়ে জীবনের ব্যর্থ প্রেমের বেদন সে নিবেদন করলে প্রিয়ের উদেখে । তারপর কাউকে কিছু না বলে দেশ ছেড়ে পরদিন একা কোথায় নিরুদেশ হয়ে গেল । শ্ৰীপতির বেী অনুরাধা ; রমা ভদ্রা। ওর অন্ত সব ভাই-বোনেরাও অভিনয় করলে । শ্ৰীপতির বে বেশভূষায়, রূপে, গলে দোদুল্যমান জুইফুলের মালায় যেন প্রাচীন যুগের রূপকথার রাজকুমারী, রমাও তাই, গানে গানে অনুরাধা তো স্টেজ, ভরিয়ে দিলে, আর কি অপূৰ্ব্ব