পাতা:বিভূতি রচনাবলী (চতুর্থ খণ্ড).djvu/২৭১

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

রূপহলুদ ૨૮ જ দিকে বুঝুন । তার কথা ভাবতে হবে আপনাকেই। আমি আজই সব বলচি তাকে খুলে । যদি তিনি তার এ পক্ষের স্ত্রীকে ব’লে ছেলেটির ওপর অত্যাচার নিবারণ করতে পারেন, তবে আপনি আমাকে কথা দিন, ছেলেটিকে আপনি নিয়ে যাবেন না ? আমি সে চেষ্টা করি, মা ? —করে । বলেই মূৰ্ত্তি অদৃশু হোল না কিন্তু। ঘর থেকে বার হয়ে দেউড়ি দিয়ে বার হয়ে মাঠের দিকে চলে গিয়ে নিশীথ-রাত্রির শুভ্ৰ-জ্যোৎস্নার কুয়াশায় মিলিয়ে গেল । আমি জিগ্যেস করলাম—বলেন কি ! —হঁ্যা মশাই । —আচ্ছ, এ মূৰ্ত্তির কোনো অংশ অস্পষ্ট নয় ? —দিব্যি মানুষের মত । কোনো অস্বাভাবিকত্ব নেই কোথাও । কথাবার্তা বললাম, আমার কোনো ভয় হোল না । একজন ভদ্রমহিলার সঙ্গে কথা বলচি, তেমনি মনে হোল । মূৰ্ত্তিটি অদৃশ্ব হওয়ার খানিক পরেই বাড়ির মধ্যে থেকে কাশীকে ডাকতে এলো। রুগীর অবস্থা খুব খারাপ। অথচ সমস্ত দিন এমন ভালো ছিলো। তথনকার মত সুব্যবস্থা করে ভোরের দিকে কাশী কবিরাজ জমিদারবাবুকে বল্লে—আপনার সঙ্গে আমার.একটু কথা আছে, বাইরে চলুন। আমি বল্লাম—বাইরে এসে সব কথা বল্লেন নাকি ? —হঁ্য, গোড় থেকে । বল্লাম, এই আপনি যেখানে দাড়িয়ে আছেন আপনার প্রথম পক্ষের স্ত্রী কিছুক্ষণ আগে সেখানে দাড়িয়ে ছিলেন। —বিশ্বাস করলেন ? —কেঁদে ফেললেন। বল্লেন,—আমি জানি । আমি এই অমুখের সময় একদিন ওকে শিয়রে দাড়িয়ে থাকতে দেখেচি । 名 তার পরের ইতিহাস খুব সংক্ষিপ্ত । জমিদার বল্লেন, আমি জানি, ওর সৎমা ওর ওপর খুব সদয় নয়—তবে এতটা আমি জানতাম না। আমি কথা দিচি, থোকা সেরে উঠলে ওর মামার বাড়িতে রেখে লেখাপড়া শেখাবো। এ সংস্রবে আর আনবো না। আমার এ স্ত্রীকেও আমি শাসন করচি। আপনি র্তাকে জানাবেন । রাত ভেরি হয়ে গেলো ! রোগীর অবস্থা ক্রমশঃ ভালো হয়ে উঠতে লাগলো। এগারো দিনের পর কাশী কবিরাজ পথ্য দিলেন তার রোগীকে । বল্লাম—ওর মাকে আর দেখেননি ? আসেননি আপনার কাছে ? —না ! ছোটনাগপুরের জঙ্গলে শহর বা তীর্থের জাকজমক গোলমাল আমার ভালো লাগে না। আমি চিরদিন নির্জন ভালোবাসি। তাই পাহাড়, নদী, বন-জঙ্গল দেখে বেড়াই। বনে-জঙ্গলে ভগবানের স্বষ্টির কি সৌন্দৰ্য্যই না দেখি ! ১৯৪৯ সালের নভেম্বর মাস,—আমি তখন ঘাটশীলায়। ছোটনাগপুরের জঙ্গল লুবার