পাতা:বিভূতি রচনাবলী (চতুর্থ খণ্ড).djvu/৩২৩

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

উৎকর্ণ \כי מס দাড়িয়ে সে কি অদ্ভূত আনন্দ পেলু পূৰ্ব্ব দিগন্তের দিকে চেয়ে । Schubert-এর মোজার্টের স্বর কতই বাজচে ওদিকে । গানের সঙ্গে নিজের মনের অনুভূতি জড়িয়ে যে অপূর্ব আনন্দের রসায়ন স্বষ্টি হল, বহুদিন আগে ইসমাইলপুরে থাকতে এমন ধরণের আনন্দ মাঝে মাঝে পেতুম, তারপর আর বহুদিন পাইনি । ওখান থেকে আমরা গোলঘর ও নিতাইবাবুর বাড়ির রাস্ত দিয়ে বাড়ি এলুম। আমাদের গরম জল দিয়ে গেল ওদের বাড়ির একটি মেয়ে। দুপুরে কমলবাবুর বাড়িতে নিমন্ত্রণে গেলুম। অনেক ভালো ভালো গোলাপ দেখা গেল তার বাগানে। সতীদেবীর মীরাবাঈয়ের ভজন গানখানা খুব ভাল লাগল। বরিখে বাদরিয়া শাওন কি শাওন কি মন ভাবন কি— - বাড়ি আবার এলুম এঞ্জিনিয়ারটির মোটরে । আসবার পথে এরিস্টলোকিয়ালত দেখাবার জন্তে ট্রেনিং কলেজে নিয়ে গেলেন। অদ্ভুত লতার ফুলটি । বৈকালে বি-এন কলেজের হোস্টেলের লনে চা-পার্টি। রোদ রাঙা হয়ে আসচে। ফটো নেওয়া হল । এখালে প্রীতি সেন বলে এক ছোকরার সঙ্গে আলাপ হল—তাকে বেশ ভাল লাগল। সন্ধ্যায় মিটিং বি-এন কলেজের হলে । আমি একটা বস্তৃতা করলুম—‘রচনার ওপরে ভূমিত্রর প্রভাব – যদু হাজরা ও শিথিধ্বজ গল্পটি পড়লুম। বহু জনসমাগম—সভার পরে এক গাদা অটোগ্রাফ থাত সই করতে প্রাণ যায় যায় হয়ে উঠল । একদল আমার সঙ্গে গল্প করতে করতে বাইরে এল । আমার বইয়ের ছোট গল্পের সম্বন্ধে ওদের কি ভয়ানক উৎসাহ ! আমার যে এত ভক্ত আছে তা জানতুম না। আমি এখনই বক্তিয়ারপুর যাব । রঙীনদা আমায় তুলে দেবেন বলে মোটরে উঠলেন, আর মণি । এঞ্জিনিয়ার ভদ্রলোকটির মোটর ; মণিদের বাড়ি এসে জিনিসপত্র নিয়ে বেরুতে যাব— মোটর স্টাট নিলে না। ভদ্রলোক কত চেষ্টা করলেন—ইপিাতে লাগলেন—আহা! তার কষ্ট দেখে আমার কি কষ্ট ! সত্যিই ভেবে এখনও আমার চোখে জল আসচে। মহা অপ্রতিভ হয়ে পড়লেন। মাত্র আর ২০ মিনিট দেরি আছে গাড়ির। একজন লোক ছুটল—একথান। ট্যাক্সি নিয়ে এল। তাতেই এলুম স্টেশনে। এসে দেখি পাঞ্জাব মেল ৫৫ মিনিট লেট। ওরা কেউ আমায় ফেলে যেতে চাইলে না। আমি একবার সে অপূৰ্ব্ব জ্যোৎস্না রাত্রে বাকীপুর স্টেশনের বাইরে এসে দাড়ালুম। এক একবার মনে হচ্চিল যেন আমি এখনও ইসমাইলপুরেই আছি। এখান থেকে আজ বা কাল গিয়ে ইসমাইলপুরের সেই প্রান্তরে গিয়ে হাজির হব। কিন্তু কি পরিবর্তনই হয়েচে জীবনে এই ক’বছরে । তখনকার আমি আর বর্তমান আমিতে অনেক তফাৎ । জীবনে তখন মুখ ছিল, সে অন্তরকম । আর এখন, এ অন্তরকম । তখন জীবন ছিল নির্জন, এখন খুকু এসেছে, সুপ্রভ এসেচে। সুপ্রভার কথা অত্যন্ত মনে হচ্চিল, আমি সেদিন যে পত্র দিয়েচি, তা শিলচরে আজ ঠিক পেয়েচে । এমন সময় পাঞ্জাব মেল এল। একটি মেয়ে লক্ষেী একজিবিশন দেখে ফিরচে, তার সঙ্গে রভীনবাবু আলাপ করিয়ে দিলেন। বল্লেন—এই যে বিভূতিবাবু, ইনি বলচেন আমার সঙ্গে আলাপ করিয়ে দিন বিভূতিবাবুর। আমি খুজছিলুম, কোথায় গিয়েছিলেন ? মেয়েট বেশ ভাল, অমায়িক স্বভাব, মুন্দরীও বটে। জিগ্যেস করলুম–লক্ষ্মেী একৃজিবিশন কেমন দেখলেন । তিনি বল্পেন—বেশ ভালই, আপনি দেখেন নি ? বল্লুম—কই আর দেখলুম! মনে হল আমাদের পাড়ার খুড়ীমা, ন’দি প্রভূতি মেয়েদের কথা । ওরা পরকে ভাবে