পাতা:বিভূতি রচনাবলী (চতুর্থ খণ্ড).djvu/৩৬০

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

\58ხ^ বিভূতি-রচনাবলী আপনার কলকাতা থেকে এসে বক্তৃতাটি দিয়েই পালান, এতে এথানকার লোকে দুঃখিত।” একটি ছেলে দোরের কাছে দাড়িয়ে প্রণাম করলে, একবার দুবার। একবার যখন করলে, তখন আমি ওর দিকে চাই নি। আবার যখন করলে, তখন আমি ওর কাধে হাত দিয়ে বাইরে নিয়ে গেলুম। বল্লুম—তোমার নাম কি ? বাড়ি কোথায় ? ও বল্লে—বাড়ি ভাগলপুরে। আমি নবীন গাঙ্গুলীর নাতি। তখন তো আমি অবাক্। ওদের বাড়ি কত গিয়েচি ভাগলপুরে থাকতে সে কথা বলি । তিনকড়িকে চেন ? বলতেই বল্লে—ই, তিনি আমার মেসোমশায় । অমরবাবুর মোটরে মণিকে তুলে নিয়ে চলে এলুম মণিদের বাড়িতে। ইন্দু যে কোথায় ছেড়া মাদুর পেতে বসে আছে, খুকু যে ম্যালেরিয়া জরে পড়ে ভুগচে, কেবল এই সব কথা মনে পড়ে । মণির বাড়িতে এসে চ খেতে পেতে অমরবাবুর সঙ্গে ভাগলপুরের দিনের গল্প করি। মোটরে আসতে আসতে তিনি মণিকে ক্ষীরোদবাবুর অশরীরীরূপে ঘরে উপস্থিত থাকার সেই পেটেণ্ট গল্পটি করলেন। আমি তো শুনে অবাক যে গত বছরের সেই সুদৰ্শন যুবক প্রতি সেনই ক্ষীরোদবাবুর ছেলে । কি সব অভাবনীয় যোগাযোগ ! এবার প্রতি সেনকে না দেখে দুঃখিত হয়েচি । অমরবাবুর গাড়িতেই স্টেশনে এলুম। মণি শেষ পর্য্যন্ত রইল। কত পুরোনো দিনের গল্প হল অমরবাবুর সঙ্গে । ওর সাদর আলিঙ্গনটি বড় বন্ধুত্বের চিহ্ন। ট্রেনে বক্তিয়ারপুর নেমে কালীদের বাড়ি এসে দেখি সে কোথায় থিয়েটারের রিহাসেলে গিয়েচে । একটু পরেই এল। কত রাত পৰ্য্যন্ত গল্প হল । ঠিক হল কাল রাজগীর যাওয়া হবে সকালের ট্রেনে । কালী ও কালীর মমশশুর তামার সঙ্গেই ছিল । শে স্টেশনের একটা জায়গা দেখিয়ে কালী বল্লে-ওখানে আমাদের 'রসচক্র সভা হয়েছিল, আমি একটা কবিতা পড়লুম। আমি বল্লুম—তুমি কবিতা লেখো নাকি ? বল্লে—শোনাব এখন। বাড়িতে আছে । আহা, ওরা সভা-সমিতিতে যেতে পারে না, এক-আধটু হলে কি খুশিই হয়। Ignominy thirsts for respect-ff foffè zÇğZ5 fsğ fèrofil চেরো, হরনেীং–এই সব স্টেশনের নাম। অপরুষ্ট ও নোংরা বিহারের বস্তি। ধুলো, ধুলো—সৰ্ব্বত্র ধুলে। ধুলো-পড়া পেড, খেয়া ক্ষীর (এদেশে বলে মেওয়া) ও তিলুয়৷ বিক্ৰী হচ্চে দোকানে। এক ঘরের দেওয়ালের গায়ে আর এক ঘর বাড়ি তুলেচে । শো স্টেশনে বেঙ্কটেশ্বর প্রসাদ বলে একজন হিন্দি গ্রাম্য কবির সঙ্গে আলাপ হল । লোকটিকে এখানে সবাই পাগল বলে—তা তো বলবেই। কবিকে চিনবার মত লোক এ সব পাড়াগায়ে কে আছে ? কবি আমার সঙ্গে পরিচিত হয়ে খুবই আনন্দ প্রকাশ করলেন। আসবার সময়ে তিনি দয়া করে শো স্টেশনে আবার আমাদের কামরাতেই উঠে দেখা করেছিলেন । įr রাজগীরের শৈলমাল দূর থেকে ধোয়ার মত দেখা গেল। কিছু পরেই বিহার-শরিক ও নালন্দা। নালন্দা থেকে ট্রেন ছলে দূর থেকে স্তুপ ও বাড়িঘর দেখা গেল। এবার আর নালন্দা যাওয়ার সময় হল না । রাজগীর নেমে পাহাড় জঙ্গলের পথে সোন ভাণ্ডার গুহায় চলে গেলুম। বুদ্ধের চরণরজপুত এই স্থান। ঐ গুহায় বুদ্ধদেব সমাধিস্থ ছিলেন, পাশের গুহায় তার প্রিয় শিষ্য আনন্দ ধ্যানস্থ ছিলেন ।