পাতা:বিভূতি রচনাবলী (চতুর্থ খণ্ড).djvu/৩৯৬

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

Φb"8 বিভূতি-রচনাবলী গল্প করতে করতে আর কলের গান বাজাতে বাজাতে নদীর ওপর দিয়ে আসা গেল । এক একটা নৌকে আসে, আর বলি, খুকু, ভদ্রলোকের নৌকে আসচে—একটা ভালো গান দে । ও ওমনি (এই পৰ্যন্ত লিখে রেখেছিলুম, তারপর তিনমাস বড় ঝঞ্চাটে কাটল বলে লিখতে পারিনি, আজ আবার লিখচি পূজোর ছুটির মধ্যে, আজ ১৪ই অক্টোবর) একখানা ভালো রেকর্ড দেয়। এমনি করে বনগা এসে পৌছানো গেল। সেই রাত্রে লণ্ঠন ধরে আমি ঘাটে দাড়িয়ে থাকি—আর কুলিতে জিনিস বয়ে নিয়ে যায় খুকুদের বাসায় ! - তার পরদিনের পরের দিন আমরা এলুম কলকাতায়—সেখানে থেকে আসাম মেলে রওনা। পদ্মার পুল দেখে খুকু খুব খুশি । পাৰ্ব্বতীপুর স্টেশনে আমরা প্যাটফৰ্ম্মে দাড়িয়ে গেলুম। রাত্রিতে খুকু কেবল আমার জাগায় আর বলে দেখুন দেখুন—কত বড় নদী চলে গেল ! সকালে নেমে গৌহাটি । তখনই মোটর বাসে বশিষ্ঠ আশ্রম। ঘন জঙ্গলের মধ্যে । সেখানে থেকে দুপুরে পাহাড়ে উঠি । সেইদিনই আমরা রওনা হই । বিকেলে পাণ্ডুঘাটে একটা থাবারের দোকানে খাওয়ার সময় খুকু বল্লে—দাড়ান, দাড়ান, ওরা বিল দেবে তো ! কথাটা আমার বড় ভালো লাগল। এরা আবার খাবার দোকানে বিল দেয় নাকি ! সকালে পাৰ্ব্বতীপুরে আবার চা খেলুম সকলে। সেই দিনই বৈকালের ট্রেনে বনগ। খুকুর বিয়ে হল এই দিনে। আমি বিকেলের গাড়িতে বনগী গেলুম। আমার হাতে ছিল একখানা লিপিকা, আমার কাগজ নতুন বার হয়েচে । সেখানা ওর হাতে নিয়ে গিয়ে দিলুম। ও এল বাইরের ঘরে। বল্পে—এত দেরিতে এলেন যে বড় ! বিবাহ চুকে গেলে রাত তিনটের মেলে কলকাতা এলুম। এদিন পাবনা গেলুম সভাপতিত্ব করতে। আর বছর এই দিনে নাগপঞ্চমীর দিন বাড়ি গিয়েছিলুম—খুকুর বাড়ি থেয়েছিলুম সেকথা মনে পড়ল। সৎসঙ্গ আশ্রমে গিয়ে নতুন মেজ বৌদিদির সঙ্গে আলাপ হয়। মেজ বৌদিদির দুই বোন গান করলে বেশ । খুকুর পত্র পেলুম মানকুণ্ডু থেকে। ও লিখেচে যেতে। বিকেলের গাড়িতে মানকুণ্ডু গেলুম। আমি, দেবু ও খুকু বেড়াতে গেলুম খ-দের বাগানে। খুব যত্ন করলে। অনেক কথা বলে। তার পরদিন চলে এলাম । yপূজার ছুটি প্রায় শেষ হয়ে এল। বনগাতেই ছিলুম সারা ছুটি । খুকুও আছে বনগারে । ওদের বাড়ি প্রায়ই ছবেলা বেড়াতে যাই। একদিন যাইনি, সেদিন সপ্তমী পূজোর দিন, হাজারির বাড়ি গোপালনগর গেলুম বেড়াতে। অল্পদিন হল বর্ষ থেমেচে, হামলী লতায় ফুল ধরেচে, আরও নানা বনফুলের সুগন্ধ সকালের বাতাসে। আকাশ নীল, গাছপালা ঘন সবুজ। হাজারি ওখানে খেতে বল্পে। সুধীরদ, জিতেন, আমি, বিজন—সবাই মিলে খুব আডা দেওয়া গেল। গত গ্রীষ্মের ছুটিতে একদিন রাত্রে বারাকপুরের বাড়িতে যে লোকটি আমায় কবিতা শুনিয়েছিল, সেই কুণ্ডুমশায় আমাকে নিভৃতে ডেকে তার নতুন লেখা কবিতা শোনালে। গৌর কলুর দোকানে বসে অল্পক্ষণ গল্প করি। এসব জায়গায় আসিনি আজ চার মাস—সেই জ্যৈষ্ঠ মাসের ছুটির পর আর আসিনি। এসব জায়গায় যেন বারাকপুরের জ্যৈষ্ঠ মাসের গরমের ছুটির আবহাওয়া মাখানে, খুকু মাখানে, বকুলতলা মাথানে—আমার হাট করে নিয়ে যাওয়া, “ও খুকু,